চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের সেই প্রার্থী মুজিবুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।
 
রোববার (৫ মে) এই নির্দেশনা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছেন ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে- ১৫ জুন অনুষ্ঠেয় চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী মুজিবুল হক চৌধুরী ঘোষণা দেন যে, ভোটকেন্দ্রে ইভিএমের বাটন টিপতে না পারলে টিপে দেওয়ার জন্য নিজের লোক রাখবেন এবং ইভিএমকে যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করে বিজয় ছিনিয়ে আনার হুমকি দিয়েছেন। একই সঙ্গে ইভিএম না থাকলে রাতেই সব ভোট নিয়ে ফেলতেন এমন বক্তব্য বিভিন্ন পত্রিকা, টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানা যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় প্রশাসন ও নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্তে এসব বক্তব্য প্রমাণিত হয়।

এই কার্যক্রম ইউনিয়ন পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা- ২০১৬, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালা- ২০১০ এবং দণ্ডবিধি অনুযায়ী অপরাধ। এই প্রেক্ষাপটে চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী মুজিবুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়েরর (জিআর মামলা) জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছে।

এ অবস্থায় ওই সিদ্ধান্ত অনুসারে মামলা দায়েরের লক্ষ্যে এজাহার দায়ের ও প্রাসঙ্গিক অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

অপর এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে- আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠিতব্য বাঁশখালীর চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনী তফসিল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিতের জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছে। এ অবস্থায় ওই সিদ্ধান্ত অনুসারে গণবিজ্ঞপ্তি জারিসহ পদ্ধতিগতভাবে কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

নির্বাচনী অপরাধে জড়িত থাকায় সম্প্রতি ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মো. আব্দুল খালেকের প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তার আগে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতকে সতর্ক করে সংস্থাটি। এছাড়াও নির্বাচনী আচরণ বিধি ভাঙার অভিযোগে শরীয়তপুর-১ আসনের এমপি ইকবাল হাসান, ঝিনাইদহ-২ আসনের এমপি তাহজীব আলম সিদ্দিকী ও ঝিনাইদহ-১ মো. আব্দুল হাইকে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না করার জন্য নির্দেশনা দেয় নির্বাচন কমিশন।

আগের নির্বাচন কমিশনগুলো যখন অভিযোগ না পেলে কিছু করার নেই বলে বিবৃতি, ব্যাখ্যা দিতেন, সেখানে বর্তমান কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে নিজ উদ্যোগে তথ্য সংগ্রহ করে ব্যবস্থা নিচ্ছেন। 

এই কমিশন প্রথমবারের মতো একটি কমিটিও গঠন করেছে, যারা প্রতিদিন বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তথ্য সংগ্রহ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বেলা ১১টার মধ্যে রিপোর্ট করেন।

এসআর/ওএফ