তিন মাস বয়সী রিহাত ও ছয় বছর বয়সী ছেলে দিহান। তাদের নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বামীর খোঁজে এসেছেন রেশমা বেগম। সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের দুই দিন পরও স্বামী শাহজাহানের কোনো খোঁজ পাননি রেশমা।

স্বামীর সন্ধানে সোমবার (৬ জুন) সকালে দুই সন্তানকে ডিএনএ দিতে নিয়ে এসেছেন রেশমা। ডিএনএ দেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে অপেক্ষা করছিলেন তারা।

রেশমা যখন কথা বলছিল তখন কোলেই ছিল রিহাত। আর মায়ের হাত ধরে দাঁড়িয়ে ছিল দিহান। তাদের মা রেশমা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাত ১০টার দিকে সর্বশেষ আগুন লাগার তথ্য জানিয়েছিল শাহজাহান। এরপর আর কথা হয়নি। দুই দিন ধরে খুঁজেও তার কোনো সন্ধান পাইনি। আমাদের পরিবারের একমাত্র অবলম্বন ছিলেন তিনি। এখন আমাদের দেখার কেউ রইল না।

তিনি বলেন, হাসপাতালে এসে সবাই তো অনেক কিছুই পেয়েছে। আমরা কিছুই পাইনি। জীবিত হোক, মৃত হোক তাকে ফেরত চাই। এখন আর কোনো চাওয়া নেই।

চট্টগ্রামের মনসুরাবাদ এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকতেন শাহজাহান। পেশায় ট্রাকচালক ছিলেন।

শাহজাহানের ছয় বছর বয়সী ছেলে দিহান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাবা প্রতিদিন বাসায় আসার সময় আমার জন্য চকলেট, চিপস বা কিছু না কিছু নিয়ে আসত। কিন্তু কালকে তো বাবা বাসায় আসেনি। বাবা যদি না থাকে, কে আমাকে দোকানে নিয়ে মজা কিনে দেবে।

শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ দুর্ঘটনায় ৪৯ জন নিহত ও ২ শতাধিক আহত হয়েছেন।

ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে ইউনিট আরও বাড়ানো হয়। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও পুরোপুরি নেভেনি। বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করছে।

কেএম/এসএসএইচ