ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্রে জিসানুল ইসলাম নামে এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে কক্সবাজারে ধর্ষণের শিকার হয় চট্টগ্রামের দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। পরে বাসায় ফিরে আত্মহত্যা করে মেয়েটি। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।

গ্রেপ্তারকৃত দুজন হলেন রুবেল (১৯) ও জিসানুল ইসলাম (২০)। তাদের ঢাকার পাশের একটি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বুধবার (৮ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর মালিবাগের সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর।

তিনি বলেন, আমরা গণমাধ্যম সূত্রে জানতে পারি, বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে চট্টগ্রাম থেকে এক বান্ধবীকে নিয়ে কক্সবাজার যায় ওই শিক্ষার্থী। সেখানে এক টমটম চালক তাকে ধর্ষণ করে। গত ৩ জুন ভোরে সিএমপির বায়েজিদ বোস্তামি থানার ড্রিমল্যান্ড আবাসিক এলাকায় নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।

গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ কর্মকর্তা মুক্তা ধর বলেন, ওই তরুণীর বন্ধু জিসান চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামি থানা এলাকায় ফুলকলি মিষ্টির কারখানায় কাজ করত। ফেসবুকে পরিচয়ের সুবাদে এক বছর যাবৎ তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জিসান নতুন চাকরি নিয়ে কক্সবাজারে যায়। দুজনের মধ্যে মোবাইলে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।

এক পর্যায়ে বন্ধু জিসানের আমন্ত্রণে গত ৩১ মে ওই তরুণী তার এক বান্ধবীকে নিয়ে কক্সবাজার যায়। সেখানে গেলে জিসান জানায় সে অনেক ব্যস্ত, দেখা করতে পারবে না। জিসান তার তিন বন্ধুকে ওই তরুণীর কাছে পাঠায়। কিন্তু ওই তরুণী জিসানের তিন বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকার করে। তখন ওই তরুণীকে চট্টগ্রাম ফিরে যেতে বলে জিসান।

এরপর তরুণী ও তার বান্ধবী একটি টমটম নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে যায়। তারা চট্টগ্রাম ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরমধ্যে ঘটনা শুনে টমটম চালক রুবেল ওই তরুণীকে জিসানের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। রুবেল দাবি করে জিসান তার পরিচিত। এই আশ্বাসে তরুণী টমটম চালকের কাছে থেকে যায় এবং সঙ্গে থাকা বান্ধবীকে চট্টগ্রাম পাঠিয়ে দেয়।

জিসানকে খুঁজে বের করার অভিনয় করে রুবেল ওই তরুণীকে নিয়ে কক্সবাজারের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করে কালক্ষেপণ করে। জিসানকে খবর দেওয়া হয়েছে এবং সে রাতে এসে দেখা করবে- এমন আশ্বাস দিয়ে রুবেল ওই তরুণীকে একটি হোটেলে নিয়ে যায়।

রাতে জিসান এসেছে বলে রুবেল হোটেলের কক্ষে প্রবেশ করে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে একাধিকবার ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। ভোর হওয়ার আগে কৌশলে সে পালিয়ে যায়।

পরদিন রাতে চট্টগ্রামের বাসায় ফিরে যায় ওই তরুণী। ৩ জুন সে আত্মহত্যা করে।

আত্মহত্যার ঘটনায় তরুণীর বোন ফেসবুক বন্ধু জিসানুল ইসলাম ও টমটম চালক রুবেলের বিরুদ্ধে বায়েজিদ বোস্তামি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। 

জেইউ/আইএসএইচ