উজবেকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী সারদর উমুরজাকভ

উজবেকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী সারদর উমুরজাকভ বাংলাদেশ সফরে আসছেন। আগামী ২৯ জুলাই তিনি দুদিনের সফরে ঢাকায় আসবেন। উজবেক উপ-প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে তাসখন্দের সঙ্গে কয়েকটি চুক্তি সই করতে চায় ঢাকা।

বুধবার উজবেকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জাহাঙ্গীর আলম ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের দিক থেকে রাষ্ট্রপতিসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী উজবেকিস্তান সফর করলেও তাসখন্দের দিক থেকে সে অর্থে বড় সফর হয়নি। উজবেকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী সারদর উমুরজাকভ বাংলাদেশ সফর করতে রাজি হয়েছেন। আগামী ২৯ জুলাই তার সফরের তারিখ চূড়ান্ত হলো। এটি আজই চূড়ান্ত হলো।

রাষ্ট্রদূত জাহাঙ্গীর জানান, তাসখন্দের পক্ষ থেকে সফরটি দুদিন করতে চায়। তবে আমরা বলেছি, আরেকটু বাড়িয়ে নিতে। তিনি পাকিস্তান হয়ে বাংলাদেশ সফরে যাবেন। তার সঙ্গে বড় একটি ডেলিগেশন থাকবে।

তাসখন্দের বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা যায়, বুধবার উজবেকিস্তানের ফার্স্ট ডেপুটি মিনিস্টার অব ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ট্রেড লাজিজ কুদ্রাতভ ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জাহাঙ্গীর আলমের মধ্যে উপ-প্রধানমন্ত্রীর  কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দিপাক্ষিক বৈঠকে সভার তারিখ ও উজবেক উপ-প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়।

উজবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী সারদর উমুরজাকভের সঙ্গে দেশটির সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধি, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী বাংলাদেশ সফর করবেন। সফরে তিনি ঢাকা ও তাসখন্দের মধ্যে অনুষ্ঠেয় ইন্টার গভর্নমেন্টাল কমিশন অন ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সভায় দেশটির হয়ে নেতৃত্ব দেবেন। উভয় দেশের এ যৌথ কমিশনের তৃতীয় সভাটি নয় বছর পর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।  

বৈঠকে অধিকতর বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের পাশাপাশি টেক্সটাইল, তৈরি পোশাক, ফার্মাসিটিউক্যালস, সিরামিকস, লেদার, আইটি ও পর্যটনের ক্ষেত্রে দুদেশের মধ্যে বিনিয়োগ ও সহযোগিতার বিষয়ে বৈঠকে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। এ ছাড়াও তাসখন্দ-ঢাকা রুটে যাত্রীবাহী বিমান চলাচল চুক্তি ও ঢাকায় উজবেকিস্তানের দূতাবাস খোলার অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে উজবেক সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে মর্মে মন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন।

উজবেক উপ-প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরে সমঝোতা স্মারক বা চুক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা সফর নিয়ে আরও আলোচনা করব। আমরা কয়েকটি চুক্তি করতে চাই। তা নিয়ে আরও কাজ করব। বিস্তারিত বিষয়গুলো চূড়ান্ত হতে আরও সময় লাগবে।

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, তাসখন্দের সঙ্গে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়াতে চায় ঢাকা। দেশটির বিনিয়োগ যেন বাংলাদেশে আসে, সেই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে উজবেকিস্তানের বাংলাদেশ দূতাবাস। উজবেক উপ-প্রধানমন্ত্রীর সফরে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল, দ্বৈতকর পরিহার, সাংস্কৃতিক বিনিময়, ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের এক মাসের ফ্রি ভিসা চালু, দুদেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের ভিসা ওয়েভার চুক্তি, শিক্ষা ও কারিগরি ক্ষেত্রে সফর বিনিময়ে খসড়া চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকগুলো সই করতে চাইবে ঢাকা।

তাসখন্দের বাংলাদেশ দূতাবাসের তথ্য বলছে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ উজবেকিস্তানে সফর করেন। এ ছাড়া সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী গত কয়েক বছরে দেশটি সফর করলেও সে অর্থে দেশটির সরকারি মন্ত্রী কিংবা বড় পর্যায়ের কোনো নেতার সফর হচ্ছে না। তাই এ সফরটিকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে দূতাবাস।

এনআই/আরএইচ