পদ্মা সেতুর দুই পাড়ে উদ্বোধন হওয়া নতুন থানাগুলোর মাধ্যমে উভয় পাড়ের মানুষ সহজেই আইনি সেবা পাবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

মঙ্গলবার (২১ জুন) বিকেলে রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে পদ্মা সেতু (উত্তর) থানা ও (দক্ষিণ) থানার কার্যক্রম, পুলিশ কর্তৃক দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মিত ১২০টি গৃহ হস্তান্তর, পুলিশ হাসপাতালসমূহের আধুনিকায়ন প্রকল্পের আওতায় ১২টি পুলিশ হাসপাতাল, ৬টি নারী ব্যারাক ও অনলাইন জিডি কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের জায়গায় পৌঁছেছে পুলিশ। জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ বার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশ পুলিশ গৃহহীনদের মধ্যে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে।

পদ্মা সেতু উত্তর ও দক্ষিণ থানা নিয়ে বলেন, পদ্মা সেতুর আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষায় সেতুর উভয় পাশে দুটি থানা নির্মাণ করা হয়েছে। এই থানাগুলোর মধ্যমে সাধারণ জনগণ সহজে আইনি সেবা নিতে পারবে। এছাড়া সেতুর আশপাশের এলাকাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা কার্যক্রমে গতিশীলতা আসবে।

পুলিশ হাসপাতালে নির্মাণ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, পুলিশ সদস্যদের জন্য নির্মাণ করা হাসপাতালগুলো পুলিশ সদস্যদের স্বাস্থ্যসেবায় মান উন্নত করবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, থানায় উপস্থিত হয়ে সাধারণ ডায়েরি করার বিষয়টি বহুদিন যাবত চলে আসছিল। অনলাইন জিডি মাধ্যমে মানুষ এখন ঘরে বসে জিডি করতে পারবে। অনুসন্ধান শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঘরে বসে অনলাইনে জিডি সকল কার্যক্রম মানুষ দেখতে পারবে। এভাবে সরকারি সেবা জনগণের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা কাজ করছি।

এদিকে অনুষ্ঠানে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড.বেনজীর আহমেদ বলেন, পদ্মা সেতুর নিরাপত্তাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার অপরাধ দমন ও ট্রাফিক ব্যবস্থাসহ সকল আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতু উত্তর ও শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা করা হয়েছে। আমার বিশ্বাস পদ্মা সেতু দেশের আর্থিক উন্নয়নে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে। এই পরিবর্তনের সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশ দেশ ও মানুষের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।

আইজিপি বলেন, বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকীতে দেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না প্রধানমন্ত্রীর এই প্রত্যয় বাস্তবায়নে সারা দেশে ৫২০টি গৃহ নির্মাণ করেছে পুলিশ। যা গৃহহীনদের মাঝে পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হয়েছে।

এ সময় তিনি পুলিশ হাসপাতালের বিষয়ে বলেন, পুলিশ সদস্যদের স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করার জন্য বিভিন্ন জেলায় নতুন করে ১২টি পুলিশ হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে পুলিশের বাহিনীর স্বাস্থ্যসেবার বিষয়ে ব্যাপক সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি পাবে।

পুলিশের নারী সদস্যদের জন্য নব-নির্মিত ব্যারাকের বিষয়ে আইজিপি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশে প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার নারী সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দেশের ৬৪ জেলায় পৃথক নারী ব্যারাক নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ২০২০ সালে দেশের ২২ জেলায় নারী পুলিশ সদস্যদের জন্য আধুনিক ব্যারাক নির্মাণ সম্পন্ন হয়। চলতি বছর ৬ ইউনিটের নারী ব্যারাক নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।

অনলাইন জিডি নিয়ে আইজিপি বলেন, জনগণের কাছে পুলিশি সেবা আরও সহজ করতে অনলাইন জিডি চালু করা হয়েছে। এখন ঘরে বসে নাগরিকরা অনেক ক্ষেত্রে জিডি করতে পারবেন। আমরা বিশ্বাস করি অনলাইন জিডির মাধ্যমে যে সেবা নাগরিকরা পাবেন, এর মাধ্যমে পুলিশ আরও জনবান্ধব হয়ে উঠবে।

এমএসি/এসকেডি