পুরান ঢাকা কেমিক্যালমুক্ত করতে সিদ্ধান্তের দ্রুত বাস্তবায়ন দাবি
পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টা চৌরাস্তায় বেশ কয়েকটি সংগঠনের যৌথ মানববন্ধন
পুরান ঢাকাকে কেমিক্যালমুক্ত করতে সেখান থেকে কারখানা, গুদাম ও দোকান অপসারণ সিদ্ধান্তের দ্রুত বাস্তবায়ন ও দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে পরিবেশ বাচাঁও আন্দোলন (পবা)। একইসঙ্গে তারা ৯ দফা সুপারিশও জানিয়েছে সরকারের কাছে।
রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টা চৌরাস্তায় বেশ কয়েকটি সংগঠনের যৌথ মানববন্ধন থেকে এসব দাবি ও সুপারিশ জানানো হয়। মানববন্ধনটি যৌথভাবে আয়োজন করে পরিবেশ বাচাঁও আন্দোলন (পবা), চুড়িহাট্টা অগ্নিকাণ্ডে নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সংস্থা, বানিপা, ঢাকা যুব ফাউন্ডেশন, সুবন্ধন সামাজিক সমাজকল্যাণ সংগঠন, ইসলামবাগ অনির্বাণ যুব ও সমাজ কল্যাণ সংস্থা, দেবীবাস ঘাট সমাজকল্যাণ সংসদ।
বিজ্ঞাপন
তাদের সুপারিশগুলো হলো- ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও পুর্নবাসন করতে হবে এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের সরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার সুযোগ করে দেওয়া; অগ্নিকাণ্ডের জন্য দায়ী মূল অপরাধীকে গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া; আবাসিক এলাকা থেকে সব ধরনের দাহ্য পদার্থ, অবৈধ নকল প্রসাধনী সামগ্রী কসমেটিকস তথা রাসায়নিক কেমিক্যালের দোকান, গোডাউন ও কারখানা উচ্ছেদ করা ও ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করা; মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে পুরান ঢাকার প্রতিটি আবাসিক এলাকায় তল্লাশি চালানো ও দাহ্য পদার্থ, অবৈধ নকল প্রসাধনী সামগ্রী তথা রাসায়নিক কেমিক্যালের দোকান, গোডাউন, কারখানার মালিক ও বাড়িওয়ালাদের আর্থিক মোটা অংকের টাকা জরিমানা এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা; পুরান ঢাকার সরু রাস্তায় চলাচলের উপযোগী ফায়ার সার্ভিসের বিশেষায়িত গাড়ি কেনা, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফায়ার হাইড্রেন্ড স্থাপন এবং আগুন নেভানোর আধুনিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা; কেমিক্যাল সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান পুরাতন ঢাকা থেকে সরিয়ে সরকার ঘোষিত নিরাপদ স্থানে দ্রুত স্থানান্তর করা ইত্যাদি।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের স্বজনরা এখনো স্বাভাবিক হতে না পারলেও, পুরান ঢাকা এখন স্বাভাবিক। আগের মতো রাসায়নিক গোডাউন রয়েছে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে। প্রতিটি বাড়ি যেন একেকটি বোমা ঘর। এর আগে নিমতলীতে ২০১০ সালে অগ্নিকাণ্ডে ১২৪ জনের প্রাণহানি ঘটে। আগুনের পর এলাকা থেকে রাসায়নিকের গোডাউন সরানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। কিন্তু ওই পর্যন্তই। এরপর চুড়িহাট্টায় আগুন লাগলে রাসায়নিকের গুদামগুলো সরানোর তোড়জোড় দেখা যায় আবারও। এবারও ফলাফল আগের মতোই।
বিজ্ঞাপন
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, চুড়িহাট্টা অগ্নিকাণ্ডে নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সংস্থার সভাপতি মো. নাসিরউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মাসুম সৈনিক, পবার সম্পাদক এম এ ওয়াহেদ, বানিপার সভাপতি প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন, ঢাকা যুব ফাউন্ডেশনের সভাপতি মো. শহিদুল্লাহ, নাসফের সহ-সভাপতি ক্যামেলিয়া চৌধুরী, সহ-সম্পাদক মো. সেলিম, দেবীদাসঘাট সমাজ কল্যাণ সংসদের সভাপতি মো. মুসা, ইসলামবাগ অনির্বাণ যুব সমাজ কল্যাণ সংস্থা সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল, পুরান ঢাকা পরিবেশ উন্নয়নের সভাপতি মো. নাজিমউদ্দিন, নগরবাসীর সভাপতি হাজি মো. আনসার আলী, সুবন্ধন সামাজিক কল্যাণের সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান, সচেতন নগরবাসীর সভাপতি জিএম রুস্তম খান, নদী রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব শাকিল রেহমান, কবি মো. ইব্রাহিম হোসেন প্রমুখ।
এমএইচএন/জেডএস