হজের জন্য কেনা কাপড় পরে চিরবিদায় নিলেন সাবেক সচিব মনোয়ার আহমেদ। শনিবার (২ জুলাই) রাজধানীর বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। 

গত বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) ভারতের নয়াদিল্লির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। সেখানে তার ওপেন হার্ট সার্জারি করা হচ্ছিল।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৮ জুলাই পবিত্র হজ শুরু হচ্ছে। এ উপলক্ষে শনিবার (২ জুলাই) সৌদি আরবের ফ্লাইট ধরার কথা ছিল মনোয়ার আহমেদের। হজের সকল প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করেছিলেন তিনি। হজে যাওয়ার জন্য ইহরামের কাপড় কিনেছিলেন। ইহরামের মোট ৫টা কাপড় কিনেছিলেন তিনি। এর মধ্যে হজে পরার জন্য ৩টি ও গায়ে দেওয়ার জন্য ২টি। অথচ সেই হজের কাপড় পরিয়েই শনিবার বনানী কবরস্থানে সাবেক সচিব মনোয়ারকে দাফন করা হয়।

আরও দেখুন : হজে গিয়ে বাংলাদেশির মৃত্যু, মক্কায় দাফন

মনোয়ার আহমেদের স্ত্রী সরকারের সাবেক সিনিয়র সচিব শাহিন আহমেদ চৌধুরী শোকে কাতর। চাকরি জীবনেও পাশাপাশি থাকার চেষ্টা করেছেন। দুজনেই পরিকল্পনা কমিশন থেকে সচিব থাকা অবস্থায় অবসরে গেছেন।

স্বামীকে হারিয়ে পাগল প্রায় শাহিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, আজকে হজে যাওয়ার কথা ছিল। সৌদি না গিয়ে আজকে বনানী কবরস্থানে আসতে হলো। হজে ব্যবহারের জন্য ইহরামের কাপড় কিনেছিলাম। অথচ এই কাপড় পরিয়ে স্বামীকে কবর দেওয়া হলো। 

পরিবারিক সূত্র জানায়, একেবারে সুস্থ ছিলেন মনোয়ার। হজে যাওয়ার জন্য পরিবারের চাপে হার্ট পরীক্ষা করানো হয়। এ সময় হার্টে ব্লক ধরা পড়ে। জরুরি ভিত্তিতে হার্টে সার্জারি করতে গিয়ে মৃত্যু হয় মনোয়ার আহমেদের।

আরও দেখুন : ক্ষমা চেয়েছেন শামীম ওসমান, যাচ্ছেন হজে

মনোয়ার আহমেদের মরদেহ শনিবার সকালে দিল্লি থেকে ধানমন্ডির বাসায় নেওয়া হয়। বাসায় ছুটে যান প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) আহমদ কায়কাউসসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এরপরে ধানমন্ডি বাসা থেকে মনোয়ার আহমেদের মরদেহ ধানমন্ডির বাইতুল আমান মসজিদে জানাজার জন্য নেওয়া হয়।

এ সময় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী শফিকুল আযম, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব আবুল মনসুর মো. ফয়জুল্লাহ, ইআরডি অতিরিক্ত সচিব আবদুল বাকী, ফরিদ আজিজসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। নামাজে জানাজা শেষে মনোয়ার আহমেদকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।

সহকর্মীরা জানান, ব্যক্তি জীবনে সৎ ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন মনোয়ার আহমেদ। দেশের সুনাম বৈশ্বিকভাবে উজ্জ্বল করতে ইআরডির সব উইং থেকে নানা ধরনের কর্মসূচিও তিনি বাস্তবায়ন করেছেন। মধ্যম আয়ের দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ যাতে করে উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে স্বল্প সুদে ঋণ পেতে পারে সেই বিষয়ে নানা ধরনের আলোচনা করেছেন মনোয়ার আহমেদ। কাজের দক্ষতার জন্য সচিব হিসেবে পদোন্নতি দিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করেছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

এসআর/ওএফ