লিফটে ওঠা নিয়ে রোগীর স্বজনকে মারধরের অভিযোগ ওঠেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী রিয়াজুলের স্ত্রী বিবি আয়েশা ডা.মিজানুর রহমানসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেছেন।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার জাহানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন তিনি। 

ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ গোলাম মাওলা মুরাদ। তিনি বলেন, আদালত মামলাটি গ্রহণ করে ঘটনাস্থল এবং আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে অজ্ঞাতনামা আসামিদের শনাক্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, মামলায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মিজানুর রহমান, লিফট অপারেটর মো. রাজুসহ অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত রোববার (৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মামলার বাদী ও তার স্বামী রিয়াজুল তাদের এক স্বজনকে দেখতে যান। এ সময় দ্বিতীয় তলায় লিফটে ওঠার জন্য বোতাম চাপেন। তখন লিফটম্যান দরজা খোলে বলেন, লিফট শুধু চিকিৎসকদের জন্য। অথচ এ সময় লিফটে রোগীর স্বজনরাই ছিলেন। বিষয়টি লিফটম্যানকে জানালে বিয়াজুলকে গালাগালি শুরু করেন। এরপর গালি দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ডা. মিজানুর রহমানসহ অজ্ঞাতনামা একজন মিলে রিয়াজুলকে মারধর করে। এক পর্যায়ে আসামিরা মামলার বাদীসহ রিয়াজুলকে হাসপাতালের ৫ তলার একটি কক্ষে আটকে রাখে।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, রিয়াজুলকে মারধরের সময় মামলার বাদী বিবি আয়েশা বাঁচাতে চাইলে লিফটম্যান রাজু শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে।

এদিকে ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল, অসুস্থ বোনকে দেখতে আসা নোয়াখালীর চাটখিলের রিয়াজুল অর্থপেডিকস বিভাগের এক চিকিৎসককে মারধর করছেন।

ওই দিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান ঢাকা পোস্টকে বলেছিলেন, চিকিৎসক ও স্টাফদের জন্য বরাদ্দ করা লিফট দিয়ে অর্থপেডিকস বিভাগের চিকিৎসক মিজানুর রহমানসহ স্টাফরা যাচ্ছিলেন। লিফট ভর্তি ছিল। তবুও রিয়াজুল লিফটে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করেন। লিফটম্যান রিয়াজুলকে অন্য লিফটে যাওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু রিয়াজুল এ লিফটেই যেতে চান। এ নিয়ে লিফটম্যানের সঙ্গে রিয়াজুলের তর্ক চলে। এ সময় চিকিৎসক মিজানুর বলেন, লিফটে তো লেখা রয়েছে এটা চিকিৎসক ও হাসপাতালের স্টাফদের জন্য। তখনই রিয়াজুল আপনি কে, বলে চিকিৎসকের কলার চেপে ধরেন। অন্যরা তাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেন। এরই ফাঁকে চিকিৎসককে কয়েকটি কিল ঘুষি মারেন রিয়াজুল। এ ঘটনায় চমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রাজিব পালিত বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। 

কেএম/এসকেডি