সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের ২য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

স্মরণ সভায় বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে নাসিমের অবদান চিরস্মরণীয়, যা কখনও ভোলার নয়। একাধারে তিনি সফল রাজনীতিবিদ ছাড়াও আপাদমস্তক একজন মানবিক গুণসম্পন্ন মানুষ ছিলেন।

বুধবার (৬ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিলন হলে আয়োজিত ‘আমাদের অস্তিত্বে ও মননে মরহুম মোহাম্মদ নাসিম’ শীর্ষক স্মরণ সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আব্দুর রহমান বলেন, মোহাম্মদ নাসিম পদের নয়, জনগণের নেতা ছিলেন। তিনি যখন যে দায়িত্ব পেয়েছেন সেখানেই সফলতা দেখিয়েছেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া দায়িত্ব সফলতার সঙ্গে পালন করেছেন।

তিনি বলেন, মোহাম্মদ নাসিম আজীবন দল ও মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। তার অভাব প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে অনুভব হবে। মন্ত্রী থাকাকালীন হাজার হাজার নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে দেখা করতে আসতেন। সবার সমস্যা সমাধানে তিনি চেষ্টা করতেন।

আব্দুর রহমান বলেন, পদ পেলেই কেউ নেতা হয় না। জনগণ ও নেতাকর্মীদের ভালোবাসায় একজন মানুষ নেতা হয়। মোহাম্মদ নাসিম তেমনই সবার ভালোবাসার নেতা ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, ১৯৯৬ সালে দল ক্ষমতায় আসার পর তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন। তখন দেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলে সর্বহারা পার্টির সন্ত্রাসী কার্যক্রম ছিল। নেত্রীর দেওয়া দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে তিনি সফলতার সঙ্গে এ সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। স্বাস্থ্যখাতেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ নানা ভূমিকা রেখে গেছেন। এককথায় তিনি যখন যে দায়িত্ব পেয়েছেন সেখানেই সফলতা দেখিয়েছেন।

আলোচনা সভার মুখ্য বক্তা প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে সংসদ সদস্য প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয় বলেন, আমার বাবা সিরাজগঞ্জের প্রতিটি মানুষের মনে স্থান করে নিয়েছিলেন। তাদের সাহস, আস্থা ও ভালোবাসার মানুষ ছিলেন তিনি। তিনি মন্ত্রী-এমপি নয় সব নেতাকর্মীদের প্রিয় নাসিম ভাই হিসেবে বেঁচে ছিলেন।

তিনি বলেন, বাবা নেতাকর্মীদের সব ন্যায্য কাজ ও সহযোগিতায় সব সময় এগিয়ে গেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তিনি আজীবন কাজ করে গেছেন। করোনার সংক্রমণের ভয়াবহ মুহূর্তেও তাকে ঘরে রাখা যায়নি। লকডাউনের মধ্যেও তিনি তার মানুষের জন্য ছুটে গেছেন। আর সেই মহামারির সংক্রমণেই তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের কল্যাণে মোহাম্মদ নাসিমের অবদান অনেক। কমিউনিটি ক্লিনিক, নার্সিং ইনস্টিটিউট ও কলেজ, ম্যাটস প্রতিষ্ঠাসহ স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে যে কাজ করেছেন তা ইতিহাস হয়ে থাকবে। বিএসএমএমইউর বাজেট বৃদ্ধিতে তিনি গুরুপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।  

শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৪ দলের নেতা হিসেবে তিনি সফলতার সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করেছেন। এক সময় দেশে মোবাইলে কল করলেও ৩২ টাকা লাগত আবার কল রিসিভ করলেও ৩২ টাকা লাগতো। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর সেটি জনসাধারণ মানুষের নাগালে নিয়ে এসেছেন। মোহাম্মদ নাসিম তার কাজের মাধ্যমে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তার সব ভালো কাজই সদকায়ে জারিয়া হিসেবে গণ্য হবে বলে আমি মনে করি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএসএমএমইউর উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, হেপাটোবিলিয়ারি, পেনক্রিয়েটিক ও লিভার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ  মোহছেন চৌধুরী, এনাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লায়লা আনজুমান বানু প্রমুখ।

টিআই/এসএম