ঈদ উদযাপন করতে যখন মানুষ নাড়ির টানে ফিরছে, তখনও বাড়ি না ফিরে চাকরি ফিরে পেতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন মৎস্য অধিদপ্তরের ইউনিয়ন প্রকল্পের ৫১২ জন কর্মচারী। ঈদের দিনেও তারা এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন।

তারা গত ৪৩ দিন ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। গত ৩০ জুন তাদের সাত বছরের প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ না বাড়ায় তারা এখন বেকার। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো আশার বাণী না পেয়ে গত ১৫ জুন তারা হাতে বিষ নিয়ে আন্দোলন করেন।

মৎস্য অধিদপ্তরের অধীন ‘ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্যচাষ প্রযুক্তি সেবা সম্প্রসারণ প্রকল্প (২য় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বেতনভুক্ত সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত ৫১২ জন কর্মচারীর চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে ইউনিয়ন প্রকল্পের কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ।

পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জসীম উদদীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাত বছর চাকরি করার পরও আমাদের রাজস্বকরণ হয়নি। ৫১২ জন কর্মচারী আইসিটি ও সম্প্রসারণ কাজে খুবই দক্ষ। আমাদের অধিদপ্তরের সাবেক দুই জন মহাপরিচালক কাজী শামস আফরোজ ও রাশেদুল হক চৌধুরী রাজস্বকরণের জন্য প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু মন্ত্রণালয় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরিকল্পনামন্ত্রীসহ ৭০ জন সংসদ সদস্য আমাদের জন্য ডিও লেটার দিয়েছেন। জেলা, উপজেলা মৎস্য অফিসাররা প্রস্তাব করেছেন, কিন্তু অধিদপ্তর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

আন্দোলনরত ইউনিয়ন প্রকল্পের কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি মো. রিয়াদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২০২০ সালের জুনে আমাদের প্রকল্পের মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হলে ২ বছর বাড়ানো হয়। ডিপিপি থেকে বলা হয়, মেয়াদ শেষ হলে চাকরি রাজস্বভুক্ত করা হবে। কিন্তু ৩০ জুন মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না মন্ত্রণালয়। দুই বছর আগে আমাদের চাকরির বয়স ছিল। এখন বয়সও শেষ হয়ে গেছে। ঈদের দিনেও আমাদের অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমরণ অনশনে থাকব।

আন্দোলনরতরা বলেন, গত ৩০ জুন আমাদের চাকরি শেষ হয়ে গেছে। আমরা কোথায় যাব। দীর্ঘদিন ধরে দেশের মৎস্যসম্পদ রক্ষা ও উন্নয়নে কাজ করেছি। কিন্তু আমাদের দীর্ঘ পরিশ্রমকে কেউ মূল্যায়ন করেনি। আমাদের নিয়ে কেউ চিন্তাও করছে না। আমরা অতি দ্রুত সমস্যার সমাধান চাই। প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় ৬০০টি ক্ষেত্রে সহকারী পদ রাজস্ব খাতে সৃজনের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু মৎস্য অধিদপ্তর তা করছে না। অন্যদিকে ডিপিপি সংশোধনে বলা হয়েছে, প্রকল্প শেষে পদগুলো রাজস্ব খাতে নেওয়া হবে। কিন্তু অধিদপ্তর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

মানববন্ধন ও অনশন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মৎস্য অধিদপ্তরের ইউনিয়ন প্রকল্পের কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মো. সাইদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মো. জসীম উদদীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রকিবুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ সুমন হোসেন।

আইবি/এসএসএইচ