আর মাত্র একদিন পরেই ঈদুল আজহা। আর আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে জমে উঠতে শুরু করেছে রাজধানীর কোরবানির হাটগুলো। সকাল থেকেই কোরবানির হাটগুলোতে বাড়তে থাকে ক্রেতাদের উপস্থিত। ক্রেতাদের এমন আগমনে বিক্রেতাদের চোখেমুখেও হাসি।

শুক্রবার (৮ জুন) সকালে রাজধানীর সাঈদনগর কোরবানির অস্থায়ী পশুর হাটে সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তার দুই পাশে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। রাস্তার দুই পারে গরুর হাট ও মাঝখানে ছাগলের হাট।

গরুর হাটে দেখা যায়, মাঝারি আকারের গরুর শেডগুলোতেই ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশি। এরপর যথাক্রমে ছোট ও বড় গরুর শেডে ক্রেতাদের উপস্থিত।

সরেজমিনে দেখা যায়, ক্রেতারা ঘুরে ঘুরে মাঝারি আকারের গরুগুলোর শেডে যাচ্ছেন। বিক্রেতাদের সঙ্গে গরুর দাম নিয়ে কথা বলছেন। যাদের দামে বনিবনা হচ্ছে তারা কোরবানির পশুটি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আর যাদের দামে বনিবনা হচ্ছে না তারা অন্য শেডে চলে যাচ্ছেন।

তবে সাঈদনগর পশুর হাটে মাঝারি আকারের গরুর দামে নিয়ে কিছুটা অসন্তুষ্টি দেখা গেছে ক্রেতাদের মাঝে।

ক্রেতারা বলছেন, এখানের গরুর বেপারীরা বুঝে গেছেন ঢাকা শহরের ক্রেতাদের চাহিদার টার্গেটে শীর্ষে মাঝারি আকারের গরু। আর এ কারণে মাঝারি আকারের গরুতে সব থেকে বেশি দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা।

সাঈদনগর কোরবানির পশুর হাট ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২ মণ থেকে প্রায় ৩ মণ ওজনের মাঝারি আকারের গরুর দাম তারা সর্বনিম্ন ১ লাখ ১০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম চাচ্ছেন। অন্যদিকে বড় আকারের গরুর দাম শুরু হচ্ছে ২ লাখ থেকে এবং ছোট আকারের গরুর দাম ৬৫ হাজার থেকে ৮৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।

রাজধানীর বাড্ডা এলাকা থেকে কোরবানির পশু কিনতে আসা ক্রেতা মো. সাইদুর রহমান বলেন, প্রায় আড়াই মণ ওজনের একটি গরুর দাম ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা চেয়েছে বিক্রেতা। আমি ১ লাখ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম বলেছি কিন্তু গরু ছাড়ছেন না বিক্রেতা। মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি থাকায় বিক্রেতারা দাম অনেক বেশি চাচ্ছেন।

রাজধানীর মালিবাগ থেকে আসা ক্রেতা জামিল হোসেন বলেন, সকালে এসেছি হাটে। কিন্তু দামে বনছে না, তাই হাটে ঘুরছি। বিক্রেতারা জানে রাজধানীবাসীর কোরবানির জন্য পছন্দের শীর্ষে মাঝারি আকারের গরু। তাই উচ্চ দাম হাঁকিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। এছাড়া বাজারে ক্রেতাও বেশি, তাই সব মিলিয়ে এ অবস্থা। তবে এখন দাম না কমলেও শেষ বাজারে দাম কমবে, সেই অপেক্ষায় আছি।

এদিকে বিক্রেতারা বলছেন তাদের লাভবান হতে হবে মাঝারি আকারের গরু বিক্রি করেই। তাই কাঙ্ক্ষিত দাম না হওয়া পর্যন্ত তারা গরু ছাড়বেন না।

নাটোর থেকে ৭টি মাঝারি আকারের ও ৩টি বড় গরু নিয়ে এসেছেন ব্যবসায়ী আনোয়ার বেপারী। তিনি বলেন, ৭টির মধ্যে ৪টি বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ২৫ করে। আর বাকি ৩টির দাম হচ্ছে। বড়গুলোর তেমন দাম-দর হচ্ছে না। আমরা সারা বছর গরু পালন করি কোরবানির ঈদে কিছু লাভের আশায়। আর আমাদের লাভ করতে হবে মাঝারি আকারের গরু দিয়েই। কারণ ছোট ও বড় গরুর চাহিদা তেমন বেশি না।

বিক্রেতারা নাকি অনেক বেশি দাম চাচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে সাঈদনগর কোরবানির হাটে কুষ্টিয়া থেকে গরু নিয়ে আসা বহর আলী বলেন, আমাদের একটি গরু পালতে সারা বছরে কত টাকা খরচ হয় ক্রেতাদের তা বুঝতে হবে। জিনিসপত্রের যেভাবে দাম বেড়েছে তাতে আমাদের গরু পালতে কয়েক গুণ বেশি টাকা খরচ হয়েছে। সেই তুলনায় ন্যায্য দাম চাচ্ছি আমরা।

এমএসি/আইএসএইচ