শুধু পাহারায় অপরাধ কমবে না, অপরাধীকে ধরতে হবে
মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘শুধু পাহারা দিয়ে অপরাধ প্রবণতা কমানো যাবে না। অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এ জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিএমপির সব পুলিশ কর্মকর্তাকে নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে।’
সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ডিএমপি সদরদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের জানুয়ারিতে অস্ত্র, মাদক, পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এ মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করেন কমিশনার।
বিজ্ঞাপন
সভায় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমরা মহামারি করোনার মতো একটি বিশেষ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করছে। শুধু পাহারা দিয়ে অপরাধ প্রবণতা কমানো যাবে না। আমাদের মূল দায়িত্ব অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা। অপরাধের শিকার কারা হচ্ছে, কখন হচ্ছে এবং কী কারণে হচ্ছে? এর সঠিক কারণ নির্ণয় করতে হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত সবাই নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করুন। ঢাকা শহরের অপরাধ প্রতিরোধে সবাইকে আরও নিরলসভাবে কাজ করতে হবে।’
জানুয়ারির মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপির আটটি ক্রাইম বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে মিরপুর বিভাগ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ক্রাইম বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনারদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন লালবাগ বিভাগের চকবাজার জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. ইলিয়াছ হোসেন।
বিজ্ঞাপন
ডিএমপির সকল থানার মধ্যে শ্রেষ্ঠ থানা নির্বাচিত হয়েছে বংশাল থানা। পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে তদন্তকারীদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন বংশাল থানার মীর রেজাউল ইসলাম।
পুলিশ পরিদর্শক অপারেশন্সে প্রথম হয়েছেন যাত্রাবাড়ী থানার আয়ান মাহমুদ। শ্রেষ্ঠ উপপরিদর্শক (এসআই) যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন পল্লবী থানার মো. শরীফুল হাসান ও মোহাম্মদপুর এসআই লব চৌহান।
শ্রেষ্ঠ সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন মতিঝিল থানার হেলাল উদ্দিন ও পল্লবী থানার মো. ফেরদৌস রহমান।
৯টি গোয়েন্দা বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে- গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। শ্রেষ্ঠ টিম লিডার হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন লালবাগ গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মধুসূদন দাস। শুধু তাই নয়, চোরাই গাড়ি ও মাদকদ্রব্য উদ্ধারে শ্রেষ্ঠ টিম লিডার হিসেবে পুরস্কৃত হন মধুসূদন দাস।
অজ্ঞান-মলম পার্টি গ্রেপ্তারে শ্রেষ্ঠ টিম লিডারে পুরস্কার পেয়েছেন গোয়েন্দা রমনা পুলিশের (ডিবি) ধানমন্ডি জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) তরিকুর রহমান।
আটটি ট্রাফিক বিভাগের মধ্যে প্রথম হয়েছে- ট্রাফিক লালবাগ বিভাগ। শ্রেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার হয়েছেন- লালবাগ ট্রাফিক জোনের মনতোষ বিশ্বাস। শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক ইন্সপেক্টর বাড্ডা ট্রাফিক জোনের মো. সাজ্জাদ হোসেন। শ্রেষ্ঠ সার্জেন্ট যৌথভাবে ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের মেহেদী হাসান ও ওয়ারীর ডেমরা ট্রাফিক জোনের মো. আমিনুর রসুল।
এছাড়াও ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার ৮৯ জন কর্মকর্তাকে পুরস্কৃত করেন ডিএমপি কমিশনার। বিশেষ ক্যাটাগরিতে অর্থ বিভাগ, এস্টেট বিভাগ, ওয়ান স্টপ সার্ভিস শাখা, আইএডি বিভাগ, উপপুলিশ কমিশনার, (স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপ) ও উপপুলিশ কমিশনারদের (ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়াও বিট পুলিশিংয়ের পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তাকে পুরস্কৃত করেন ডিএমপি কমিশনার।
এ সময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) মো. মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) মীর রেজাউল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) কৃষ্ণ পদ রায়, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট), ড. এ এফ এম মাসুম রব্বানী, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
জেইউ/এফআর