বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত দিয়ে দালালের মাধ্যমে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ।

তিনি বলেছেন, বিভিন্ন সময় বেশ কিছু রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে এসেছে ভারত থেকে। দালাল চক্রের কার্যক্রমকে কিভাবে প্রতিহত করা যায় সেটা নিয়ে সীমান্ত সম্মেলনে বিস্তারিত কথা হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন ভারত সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমরা তাদের (বিএসএফকে) সীমান্তে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে বলেছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। 

বিজিবির পক্ষ থেকে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, ৫১ পরিবারের ২১২ জন (রোহিঙ্গা) বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে সনাক্ত করতে পেরেছি। এর বাইরে হয়তো দুর্গম পথে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে বর্ডারে যেন অবৈধ অনুপ্রবেশ না ঘটে। বিএসএফ আশ্বস্ত করেছে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেবে।  

আরও পড়ুন : সীমান্তে গুলিতে নিহত সবাই অপরাধী : বিএসএফ ডিজি

পাঁচ দিনব্যাপী সীমান্ত সম্মেলন শেষে বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দুপুরে পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিজিবি মহাপরিচালক। 

বিজিবি প্রধান বলেন, আমরা উভয় সীমান্ত বাহিনী চেষ্টা করছি গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান করতে। ফরমাল ও ইনফরমাল সম্পর্ক জোরদার করতে উদ্যোগী হওয়ার ব্যাপারে আলোচনা করেছি।

সীমান্ত হত্যা বন্ধে বিজিবির পক্ষ থেকে বক্তব্য কী ছিল? বিজিবিও কি সীমান্তে নিহত সবাইকে অপরাধী মনে করে? এমন প্রশ্নের জবাবে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি কিভাবে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে পারি। কমানো নয়, শূন্যের কোঠায় কিভাবে নামিয়ে আনতে পারি। 

আরও পড়ুন : বিএসএফের ধাওয়ায় নদীতে ঝাঁপ, ২ দিন পর ভাই-বোনের মরদেহ উদ্ধার

সীমান্তে একটা হত্যা মানে শুধু একটা মানুষের মৃত্যু নয়, এতে নিহতের পুরো পরিবার ভোগে। এলাকার মানুষের মাঝে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। আমাদের সীমান্ত বাহিনীর মধ্যে যে পেশাদার সম্পর্ক, সেটাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এসব আমরা বিএসএফকে বুঝিয়েছি। তারাও বুঝেছেন, আমরা সব সমস্যা একীভূত করে কিভাবে কমানো নয়, শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা যায়। আমাদের যে স্পিরিট সেটা কাজে লাগিয়ে আমরা আশাবাদী, এটা সম্ভব।

১৭ জুলাই পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে শুরু হয় বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলন। আজ যৌথ আলোচনার দলিল স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে ৫২তম এ সীমান্ত সম্মেলন শেষ হলো।

বিএসএফ মহাপরিচালক পঙ্কজ কুমার সিং-এর নেতৃত্বে ভারতের পররাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ ৯ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। 

আরও পড়ুন : জুনে ১৩১ কোটি টাকার চোরাচালান পণ্য জব্দ

অপরদিকে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদের নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যৌথ নদী কমিশন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, সার্ভেয়ার জেনারেল অব বাংলাদেশ এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিসহ ২০ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।

জেইউ/এনএফ