সংঘাতের নয়, সমঝোতার রাজনীতি করতেন এমাজউদ্দীন আহমদ
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেছেন, অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ সমঝোতার রাজনীতি করতেন, তিনি সংঘাতের রাজনীতি করতেন না। সবাইকে একসঙ্গে কীভাবে আনা যায় সেজন্য তিনি সারাজীবন সাধনা করেছেন।
শনিবার (২৩ জুলাই) সকাল ১০টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এমাজউদ্দিন আহমদ রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মারক বক্তৃতায় একথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
ড. আকবর আলি খান বলেন, ৮০ বছর উপলক্ষে এমাজউদ্দীনের যে সংবর্ধনা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয় এতে দেখা যায়, সব দলের লোকের তিনি উপকার করেছেন। সবার মতামত ব্যক্ত করার স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেছেন। সেখানে এক জায়গায় লেখা ছিল, অধ্যাপক এমাজউদ্দীন যখন ফজলুল হক মুসলিম হলের সহ-সভাপতি ছিলেন তখন ফজলুল হক হলের বার্ষিক ভোজ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই ভোজ সবাই প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক। এছাড়া মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এই তিনজনকে তিনি সভায় নিয়ে এসেছিলেন। এটা এমাজ ভাইয়ের পক্ষেই সম্ভব ছিল। কারণ তিনি সমঝোতার রাজনীতি করতেন, তিনি সংঘাতের রাজনীতি করতেন না।
তিনি বলেন, অধ্যাপক এমাজউদ্দীন বেসামরিক ও সামরিক আমলাদের ভূমিকা কী তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি গণতন্ত্রের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। পররাষ্ট্র নীতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
বিজ্ঞাপন
অধ্যাপক এমাজউদ্দীনের পররাষ্ট্র নীতির দর্শন উল্লেখ করে তিনি বলেন, পররাষ্ট্র নীতি নিয়ে অনেক লিখেছেন, তার মধ্যে একটি হলো বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে এবং সতর্ক থাকা উচিত। তার লেখা পড়লেই বোঝা যায় তিনি কোনো স্থায়ী বন্ধুত্বে বিশ্বাস করতেন না। তিনি বিশ্বাস করতেন রাষ্ট্রের স্বার্থ হলো স্থায়ী। কোনো বন্ধু স্থায়ী নয়। সেই দিক থেকে আমাদেরকে পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনার ইঙ্গিত দিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, বেসরকারি শিক্ষাকে নতুন মাত্রা দেওয়ার পাশাপাশি তিনি বুদ্ধিজীবী সমাজের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন। পদের জন্য নয়, দেশের জন্য এবং সব নাগরিক নামের একটি কমিটি দাঁড় করিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন তার প্রধান উদ্যোক্তা। যদিও শেষ পর্যন্ত এই আন্দোলন টিকে থাকেনি। তবুও বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী সমাজকে গড়ে তোলার জন্য এই অভিজ্ঞতা কাজে লেগেছে।
অধ্যাপক এমাজউদ্দীন উদার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করতেন উল্লেখ করে ড. আকবর আলি খান বলেন, তিনি গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। তার দুটি ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য- তিনি উদারনীতি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন ও সব দলের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অপরিহার্যতা নিয়ে তিনি বলেছেন এবং লিখেছেন।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ মাসুমের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান, অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক নাজমুল হাসান কলিমুল্লাহ, কবি আবদুল হাই শিকদার প্রমুখ।
আইবি/ওএফ