আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার চায় না জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। নির্বাচনে বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনা চায় দলটি।

মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে বসে দলটি এমন দাবি জানায়। সংলাপে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন।

মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী লিখিত বক্তব্যে বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আমরা অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী, তবে এর জন্য সকল ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করে যথোপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা অপরিহার্য বলে মনে করি।

তিনি বলেন, জনগণের ভোটাধিকার সংরক্ষণ করা মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম চেতনা। একটি কল্যাণকর আদর্শ রাষ্ট্র বিনির্মাণে এই ভোটাধিকারের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা ছাড়া যেহেতু দুর্নীতির মূলোৎপাটন সম্ভব নয়, তাই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে অবাধ, অর্থবহ, নিরপেক্ষ ও ত্রুটিমুক্ত নির্বাচনের আয়োজন করতে সাংবিধানিকভাবেই দায়বদ্ধ নির্বাচন কমিশন।

তিনি এ সময় ১১ দফা দাবি উত্থাপন করেন

১. নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার হতে হবে।

২. সকল দলের সমান সুযোগ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি) নিশ্চিত করতে হবে।

৩. নির্বাচনকে সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য করতে এবং সংঘাত-সহিংসতা এড়াতে প্রতীক বরাদ্দ থেকে নির্বাচন পরবর্তী এক সপ্তাহ পর্যন্ত প্রার্থী সমর্থক ও ভোটারদের নিরাপত্তা বিধানে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।

৪. দেশের নারী-পুরুষ ভোটারদের অধিকাংশই প্রযুক্তির মাধ্যমে ভোট দিতে অভ্যস্ত না হওয়ায় ইভিএমের পরিবর্তে ব্যালটেই ভোট গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

৫. প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সকল প্রার্থীর এজেন্টদের উপস্থিতিতে ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণার আইন শতভাগ কার্যকর করতে হবে।

৬. নির্বাচনকালীন সময়ে স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকতে হবে।

৭. স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়াকে নিরুৎসাহিত না করে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে নির্দিষ্ট সংখ্যক ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর জমা দেওয়ার আইন বাতিল করতে হবে।

৮. কেন্দ্র দখল, জাল ভোট দেওয়া ও ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা দানকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও তার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

৯. জনমনে বিতর্ক ও প্রশ্ন সৃষ্টি হয় এমন বক্তব্য প্রদানের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

১০. ত্রুটিমুক্ত ব্যবস্থা প্রবর্তন করে প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধাদেরকে ভোটদান প্রক্রিয়ার আওতায় আনতে হবে।

১১. বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। সঙ্গত কারণে এ দেশে ইসলামী রাজনীতির চর্চা থাকাটা খুব স্বাভাবিক। সুতরাং ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাহীন ও জনসমর্থনহীন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।

এসআর/ওএফ