জনশুমারির সফটওয়্যার কেনার প্রক্রিয়া জানতে চায় কমিটি
সদ্য সম্পন্ন হওয়া জনশুমারি ও গৃহ গণনা কর্মসূচিতে ব্যবহৃত ২০ লাখ ডলারের সফটওয়্যারের ক্রয় প্রক্রিয়া জানতে চেয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন পরবর্তী বৈঠকে জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, জনশুমারিতে ব্যবহৃত সফটওয়্যার কিনতে প্রায় ২০ লাখ মার্কিন ডলার খরচ হয়েছে। মৌখিকভাবে এ তথ্য জানানো হয়েছে। কমিটি জানতে চেয়েছে, এই সফটওয়্যার কোন প্রক্রিয়ায় কেনা হয়েছে, দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যোগ্যতা যাচাই করা হয়েছে কিনা- এসব বিষয় বিশদে বর্ণনা করে একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গতকাল ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রথম ডিজিটাল জনশুমারি ও গৃহ গণনার প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
এবার গণনাকারীর হাতে জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেমযুক্ত (জিআইএস) ট্যাব সরবরাহ করা হয়। ট্যাবে এমন সফটওয়্যার যুক্ত করা হয়েছে, যাতে সব তথ্য পূরণ না করে কিংবা কোনো খানা থেকে তথ্য না নিয়ে সংশ্লিষ্ট গণনাকারী ‘কাজ শেষ’ বলে ট্যাব জমা দিতে পারবেন না। দেশে এবারই প্রথম জনশুমারি ডিজিটালি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : মাত্র ৮ দিনের জন্য কেনা হচ্ছে ৪৪৭ কোটি টাকার ট্যাব!
এদিকে সংসদীয় কমিটির আগের বৈঠকের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আইসিটি টেকনোলজি সংক্রান্ত কোনো দেশীয় প্রযুক্তির সফটওয়্যার না থাকায় পরিসংখ্যান ব্যুরো বিদেশি সফটওয়্যারগুলো ব্যবহার করে। আইসিটি সংক্রান্ত কাজের জন্য আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বান করে কোয়ালিটি অ্যান্ড কস্ট বেইজ সিলেকশন পদ্ধতিতে ফার্ম সিলেকশন করা হয়েছে। এ সফটওয়্যার কিনতে খরচের পরিমাণ ২০ লাখ মার্কিন ডলার।
এদিকে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়গুলোর প্রকল্প গ্রহণ/বাজেটের পরিমাণ নির্ধারণে সহযোগিতার জন্য বিভিন্ন ধরনের হালনাগাদ তথ্য প্রদানের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং প্রতিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে অনাপত্তি সনদ (এনওসি), কার্য বিধিমালা (রুলস অব বিজনেস) ও এলোকেশন অব বিজনেস সঠিকভাবে মানা হয়েছে কিনা তা যাচাইপূর্বক অনুমোদন দিতে মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, যখন কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়, তখন হালনাগাদ তথ্যের ভিত্তিতে তা করা হয় না। আগের তথ্য মাথায় রেখে করা হয়। কমিটি বলেছে, হালনাগাদ তথ্য না থাকলে প্রকল্পের ফল আশানুরূপ আসবে না। সঠিক তথ্য না থাকলেতো কাজটাই ঠিকঠাক হবে না। এজন্য আমরা বলেছি, যেকোনো পরিকল্পনা নেওয়ার আগে যাতে হালনাগাদ তথ্য যোগাড় করা হয়।
তিনি জানান, উন্নয়ন বাজেট বরাদ্দের সময় জলবায়ু ও দুর্যোগ ঝুঁকির বিষয়টি আমলে রেখে বরাদ্দের কথা বলা হয়েছে। তারা দেখতে চায় উন্নয়ন বাজেটে জলবায়ুর বিষয়টি কতটা আমলে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রজেক্টের ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট করতে বলা হয়েছে।
বৈঠকে বৈশ্বিক বিবেচনায় জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের দায় ও ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা গ্রহণ করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে যেন উপস্থাপন করে এ বিষয়ে যথাযথ পরামর্শ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, সাবের হোসেন চৌধুরী, হাফিজ আহমদ মজুমদার, বীরেন শিকদার এবং মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা অংশ নেন।
এইউএ/এমএইচএস