ঢাকাকে একটি উন্নত ও টেকসই মহানগর হিসেবে গড়ে তুলতে সমন্বিত ও কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

রোববার (৩১ জুলাই) সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড সিটিজ সামিট-২০২২ এর মেয়রস ফোরামে অংশ নিয়ে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস এ তথ্য জানান। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাছের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ঢাকা মহানগরের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী সমন্বিত মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করছে। ঢাকা শহরকে অধিকতর বাসযোগ্য করতে ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-২০৩০’ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘রূপকল্প-২০৪১’ এর সঙ্গে সমন্বয়পূর্বক মহাপরিকল্পনার আওতায় আমরা পরিবহন ব্যবস্থাপনা, সামাজিক সুবিধা, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ের সন্নিবেশ করছি। এর মাধ্যমে আমরা একটি উন্নত নগর গড়ে তোলার পাশাপাশি টেকসই উন্নয়নও নিশ্চিত করতে কাজ করে চলেছি।

গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, বায়ুমণ্ডলে মাত্র দশমিক ৫০ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ করলেও জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অন্যতম বাংলাদেশ। ফলে বিগত কয়েক দশকে ঢাকা শহরের তাপমাত্রা যেমন বেড়েছে তেমনি ঋতু পরিবর্তন জনিত প্রভাবে স্বাভাবিক নাগরিক জীবন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে করে নগর ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জও বেড়েই চলেছে।

তিনি বলেন, এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার যথাযথ ও কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছে। এছাড়াও গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আমরা গত বছরের শেষভাগে বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ নামে শৃঙ্খলিত বাস সেবা চালু করেছি। ধীরে ধীরে এই সেবা পুরো শহরে চালু করা হবে।

ছয় ঋতুর বাংলাদেশকে আজ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর বলে মন্তব্য করে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ঋতু বৈচিত্র্যে বিপর্যয়ের পাশাপাশি নানাবিধ নাগরিক সমস্যার উদ্ভব ঘটছে। প্রলম্বিত হচ্ছে গ্রীষ্মকাল। এতে করে তাপমাত্রা বাড়ছে, সুপেয় পানির সরবরাহ কমছে। একইভাবে বর্ষাকালে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ও মাত্রায়ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সুস্পষ্ট হচ্ছে। গত বছর একনাগাড়ে ৪ মাস থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হওয়ায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি কিছুটা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছিল। যদিওবা আমাদের সামগ্রিক প্রচেষ্টায় আমরা ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি।

৪ দিনব্যাপী ওয়ার্ল্ড সিটিজ সামিট-২০২২ সিঙ্গাপুরের মেরিনা স্যান্ডস বে হোটেলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সিঙ্গাপুরের জাতীয় উন্নয়ন মন্ত্রী ও সামাজিক সেবা সমন্বয়করণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ডেসমণ্ড লি আজ সকালে সামিটের উদ্বোধন করেন।

সামিটে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ ৬০ দেশের মেয়ররা অংশ নিচ্ছেন। আগামী ৩ জুলাই সামিটের পর্দা নামবে। ডিএসসিসি মেয়রের সঙ্গে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ ও মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান সামিটে অংশ নিয়েছেন।

এএসএস/আইএসএইচ