দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুদিন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অফিস সময় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।   

আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক বন্ধের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করবে বলে জানান তিনি।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে, উনি নির্দেশনা দিয়ে দেবেন, সপ্তাহে দুদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকবে। 

কোন কোন দিন বন্ধ থাকবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা করবে। এটা ফাইনাল হয়ে গেছে, তারা আদেশ জারি করবে।

এসব সিদ্ধান্তের কারণে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে এবং ট্রাফিক জ্যাম কমবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। 

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয় তো হবেই। দেখা যাক, পরবর্তী অবস্থায় উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত চলুক। সাথে সাথে ট্রাফিক জ্যামটাও একটা ডিস্ট্রিবিউট হয়ে যাবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বেসরকারি অফিসের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। 

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সরকারি অফিসগুলোতে কোথাও কোনো পর্দা টাঙানো থাকবে না। এগুলো তুলে লাইট কম জ্বালানো এবং এয়ারকুলারও যথাসম্ভব কম ব্যবহার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

গত ৭ জুলাই বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে প্রথম পদক্ষেপ নেয় সরকার। সেদিন সারা দেশে আলোকসজ্জা না করার নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তখন পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সামাজিক অনুষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টার, শপিং মল, দোকানপাট, অফিস ও বাসাবাড়িতে আলোকসজ্জা না করার নির্দেশ দেওয়া হয়। 

আরও পড়ুন : লাইট-এসি বন্ধ রেখে বৈঠক করল সংসদীয় স্থায়ী কমিটি

এরপর জুলাইয়ের ১৯ তারিখ থেকে সারা দেশে এলাকা ভিত্তিক এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং বা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ।

মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব

জুলাই মাস থেকেই জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকারি অফিসের সময় কমিয়ে আনার বিষয়ে গুঞ্জন ছিল। ২১ জুলাই এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, যদি দেখি বিদ্যুৎ ব্যবহার কম করে পুরো সময় অফিস করতে পারছি, তাহলে অফিসের সময় কমানোর দরকার নেই। আমরা পর্যালোচনার মধ্যে আছি, কোনটা করলে ভালো হয়। এটি নির্ভর করছে পরিস্থিতির ওপর। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা। যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে সেটা করা হবে।

আরও পড়ুন :  লোডশেডিংয়ে গরমে ৮০০ মুরগির মৃত্যু

সরকার সব কর্মকাণ্ডকে স্বাভাবিক গতিতে রেখেই সব কাজ চালিয়ে নিতে চায় উল্লেখ করে সেদিন তিনি বলেন, প্রয়োজন না হলে সব কাজ স্বাভাবিক গতিতেই চলবে। 

করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের ১৬ মার্চের পর ৫৪৪ দিন বন্ধ ছিল দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। করোনার দাপট কিছুটা কমে এলে ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর শ্রেণিকক্ষে ফেরার সুযোগ পায় শিক্ষার্থীরা।  

এরপর মোটামুটি স্বাভাবিক ধারায় ফিরতে শুরু করেছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। এরই মধ্যে আবার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে দুদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত এলো।  

এসএইচআর/এনএফ