মোবাইল কোর্ট চালু হলেই সড়কে কমে যায় গণপরিবহন
গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ নানা অপরাধ দমনে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। এরই ধারবাহিকতায় রাজধানীর শাহবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার খবর পেলেই সড়কে গণপরিবহনের সংখ্যা কমে যায় নিয়মিত।
প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে রাজধানীর শাহবাগ ও মৎসভবনের মাঝস্থানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য বসেন বিআরটিএর টিম। এর এই খবর বাস চালকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে হঠাৎ করেই সেই সময়ে সড়কে কমে যেতে থাকে গণপরিবহনগুলো। পাশাপাশি একই সময়ে রাজধানীর আরও বেশ কয়কটি স্থানেও একইভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বিআরটিএ।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ন্ত্রণে মোবাইল কোর্টের নজরদারি থাকবে
শাহবাগে বিআরটিএর অভিযান পরিচালনা দলে থাকা জোনাল কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মূলত জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে গণপরিবহনের ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকার কর্তৃক পুনর্নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় কিংবা ওয়েবিলের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, ফিটনেসবিহীন, রুটপারমিটি বিহীন, রুট ভায়োলেশন, হাইড্রোলিক হর্নসহ গণপরিবহন সংক্রান্ত অন্যান্য অপরাধের জন্য বিআরটিএ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। যখন অভিযান পরিচালনা শুরু হয় তখন এই খবর গাড়ির চালকরা পাওয়ার পর কিছু সময়ের জন্য অনেকেই এই পথে তাদের গাড়ি ঢুকায়না। তবে আমাদের অভিযান নিয়মিত চলমান থাকবে।
বিজ্ঞাপন
শাহবাগে অভিযান যখন শুরু হয় তখন সেই স্থানে বাসগুলোতে উঠে পানি বিক্রি করছিলেন ইসহাক মিয়া নামের একজন হকার। তিনি বলেন, বাসের বিরুদ্ধে বিআরটিএ অভিযানের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত বসেছিল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের সামনে। বিআরটি যখন অভিযান পরিচালনা শুরু করে তখন অটোমেটিক রাস্তায় বাস কমে যায়। আগে যানজট থাকলেও অভিযানের পর হঠাৎ রাস্তা ফাঁকা ফাঁকা হয়ে যায়। মানে বাস চালকরা খবর পেয়ে যায় এই স্থানে অভিযান চলছে, তখন আর তারা এই দিকে ওই সময়ে আসেনা। আবার যখন অভিযান শেষ হয়, তখন বাসগুলোর কারণে শাহবাগ মোড় থেকে মৎসভবন পর্যন্ত যানজট সৃষ্টি হয়।
এই রুট দিয়ে মিরপুরের দিকে চলাচল করা শিকড় পরিবহনের একটি বাসের চালক আকরাম হোসেন বলেন, আসলে অনেকে গাড়ির ঠিকমত কাগজ নেই, অথবা ফিটনেস নেই। ফলে বিআরটিএর অভিযান শুরু হলে যাদের দুর্বলতা আছে তারা আর এই পথে কিছু সময়ের জন্য আসেনা। অধিকাংশ বাসেরই কাগজপত্রের গড়মিল আছে তাই অভিযান শুরু হলে তাদের মধ্যে একটা ভয় কাজ করে। আর এই অভিযান থেকে বাঁচতে তারা একটু দূরে দূরে থাকে।
বিআরটিএর উপপরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) মো. হেমায়েত উদ্দিন জানান, সরকার কর্তৃক পুনর্নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় কিংবা ওয়েবিলের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, ফিটনেসবিহীন, রুটপারমিটি বিহীন, রুট ভায়োলেশন, হাইড্রোলিক হর্নসহ গণপরিবহন সংক্রান্ত অন্যান্য অপরাধের জন্য বিআরটিএ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। আর এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও জানান, গতকাল মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ নানা অপরাধে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরের ১৩টি স্পট থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৩ লাখের বেশি টাকা জরিমানা আদায় করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
বিআরটিএ উপপরিচালক বলেন, এছাড়া অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অপরাধে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে ১৩টি স্পট বিআরটিএর ৯টি ভ্রাম্যমাণ আদালত ১৪টি বাসের বিপরীতে ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। রুট ভায়োলেশন, রুট পারমিট বিহীন, হাইড্রোলিক হর্ন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, ফিটনেস বিহীন ও অন্যান্য অপরাধের দায়ে ৭১ বাসের বিপরীতে ৭১টি মামলায় ৩ লাখ ১৯ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
এএসএস/এমএ