ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস’ গ্রাহকদের জমানো টাকা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। একইসঙ্গে বিনিয়োগ করা অর্থ ফেরত চেয়েছে এসপিসি ইউজার ফোরাম। এসময় তারা পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন।

শুক্রবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন এ দাবি করেন ভুক্তভোগীরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বক্তব্য রাখেন ফোরামের সভাপতি স্বপন আহমেদ। তিনি বলেন, দিনের পর দিন মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ১২/১৩ মাস অতিবাহিত করছে। আমরা তাদের মিথ্যা আশ্বাসের পেছনে ঘুরতে ঘুরতে আমাদের ঘাড়ে পাওনাদারদের টাকার পাহাড় চেপে বসেছে, যে টাকা পরিশোধ করার ক্ষমতা আমাদের নেই। পাওনাদারদের চাপে বাড়িঘর ছেড়ে সর্বস্বান্ত হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে হচ্ছে। এখন হামলা মামলার ভয়ে আমরা বাড়িঘর ছাড়া। আমাদের ও আমাদের পরিবারের ওপর জীবননাশের হুমকি আসছে। আজ আমরা কোনো কূলকিনারা না পেয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করছি। এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেসের এমডি আলামিন প্রধানের কাছ থেকে আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের বিনিয়াগ করা অর্থ যাতে ফেরত পাই, সেই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আমরা সরকারের উচ্চপদস্থ প্রশাসনের ভূমিকা আশা করছি।

আরও পড়ুন: যানবাহন চালকদের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি

স্বপন বলেন, আজ আমরা সবকিছু হারিয়ে মামলা ও হামলার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। কারণ, আমরা সবকিছু বুঝে ওঠার আগেই আলামিন প্রধান আমাদের বিনিয়োগ করা অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এখনও প্রতিদিনই বিভিন্ন জেলায় ঘটছে সাধারণ গ্রাহকদের ওপর হামলা। প্রতিষ্ঠানটি সরকার ঘোষিত ই-কমার্স নীতিমালা মেনে ব্যবসা পরিচালনা করুক, এটাতে আমরা এই কোম্পানির ৬৪ লাখ গ্রাহক সাধুবাদ জানাই। তবে আমাদের ন্যায্য দেনা-পাওনা মিটিয়ে তারপর। আলামিন প্রধানকে বলতে চাই, আপনারা আপনাদের খুশিমতো কোম্পানি পরিচালনা করেন তার আগে আমাদের বিনিয়োগ করা অর্থ ও এজেন্টদের পণ্য এবং সব পুরাতন লেনদেনের হিসাব বুঝিয়ে দিন।

সংবাদ সম্মেলন থেকে ক্ষতিগস্ত গ্রাহকরা প্রতারকদের হাত থেকে সুশৃঙ্খল জীবনে ফিরে আসার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। অন্যথায় দেনার দায়ে আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো রাস্তা থাকবে না বলেও উল্লেখ করেন তারা।

এসময় তারা পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। তাদের দাবিগুলো হলো—

১. ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের বিনিযোগ করা অর্থ অবিলম্বে ফেরত দিতে হবে, কোনোরকম তালবাহানা বা কাটছাঁট করা চলবে না।

২. ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের অর্থ ফেরতের ব্যাপারে কোনোরকম স্বজনপ্রীতি চলবে না, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের খুঁজে বের করে তাদের তালিকা তৈরি করে স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষভাবে অর্থ ফেরত প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।

৩. আলামিন প্রধানের বিজনেস পার্টনার জিএম আদনানকে অর্থসহ দুবাই থেকে ফিরিয়ে এনে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

৪. প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে থাকা যারা প্রতারণার সঙ্গে জড়িত আছে, তাদের ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করে প্রশাসনিক নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে অর্থ ফিরিয়ে আনতে হবে।

৫. এজেন্টদের কাছ থেকে নেওয়া ব্লাংক চেক এবং স্টাম্পগুলো ফিরিয়ে দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রিয়াজুল ইসলামসহ ভুক্তভোগী সদস্যরা।

আইবি/এসএসএইচ