অবৈধভাবে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার অভিযোগে গত জুন মাসে ঢাকা জেনারেল হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশনা দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। স্বাস্থ্যের আদেশ অমান্য করে ফের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। অনিবন্ধিত ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দ্বিতীয় দফা অভিযানের প্রথম দিনেই হাসপাতালটিকে আবারও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

সোমবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. মাহমুদুর রহমানের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযান প্রসঙ্গে মাহমুদুর রহমান বলেন, এর আগে গত জুন মাসে এই হাসপাতালটিতে এসেছিলাম, তখনই হাসপাতালটিকে বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছিলাম, কিন্তু আামাদের প্রচলিত আইনকে উপেক্ষা করে তারা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এখানে তারা নিয়মিত রোগী ভর্তি করছে, অপারেশনসহ নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করছে।

তিনি বলেন, আমাদের যে অর্ডিন্যান্স আছে, সে অনুযায়ী কোন প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স পাওয়ার আগে সেটি চালু করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা যে দুইটি প্রতিষ্ঠানে গিয়েছি, খিদমাহ লাইফ কেয়ার এবং ঢাকা জেনারেল হাসপাতাল, দুইটাই অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান, তাদের কোনো লাইসেন্স আমাদের দেখাতে পারেনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, তারা বলেছে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে, কিন্তু এখনো লাইসেন্স পায়নি। কিন্তু আমরা এখানে দেখতে পাচ্ছি যে, অপারেশন থিয়েটার থেকে শুরু করে অন্যান্য যেসব কার্যক্রম চলছে, জায়গাতেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিরাজ করছে। এখানে মেয়াদ উত্তীর্ণ মেটারিয়ালস ব্যবহার করা হচ্ছে।

খিদমাহ লাইফ কেয়ার এবং ঢাকা জেনারেল হাসপাতাল ছাড়াও এর আগে আরও দুটি হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করে কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেগুলো হলো খিলগাঁও জেনারেল হাসপাতাল ও মাতুয়াইলের কনক জেনারেল হাসপাতাল।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়, সোমবার (২৯ আগস্ট) ঢাকায় দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়। অনিবন্ধিত হাসপাতাল, ডায়গনিস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক বন্ধে ঢাকাসহ সারা দেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ অভিযান চালায়।

দুপুর ১টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাহমুদুর রহমান অভিযান চালিয়ে নিবন্ধন না থাকায় খিলগাঁও রেলগেট এলাকায় খিলগাঁও জেনারেল হাসপাতাল বন্ধ করে দেন। তবে এ সময় হাসপাতালটিতে চারজন রোগী ভর্তি থাকায় বন্ধ করার জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় দেয় অধিদপ্তর।

এর আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবিরের নেতৃত্বে আরেকটি টিম রাজধানীর বনানী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় নিবন্ধন না থাকায় বনানীর হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট অ্যান্ড কসমেটিল সার্জারি সেন্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়।

অভিযান প্রসঙ্গে আহমেদুল কবীর বলেন, এখানে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট, লেজার ট্রিটমেন্ট, ফিজিওথেরাপিসহ চুলের নানা চিকিৎসা করা হয়। তারা বলছে, তারা নাকি জানতো না যে, লেজার ট্রিটমেন্টের জন্য অধিদপ্তরের অনুমোদন দরকার। এজন্য আমরা এই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিয়েছি। এছাড়াও এখানে ভারতের যে চিকিৎসক ডা. মনোজ খান্না লেজার ট্রিটমেন্ট চিকিৎসা দিয়ে থাকেন বলে যে ছবি লাগানো হয়েছে, কিন্তু তিনি এখানে চিকিৎসা দিতে আসেন না।

তিনি জানান, আমাদের অভিযান চলমান থাকবে বিকেলে সব জানানো হবে।

এ সময় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ জানায়, আমরা জানতাম না লেজার ট্রিটমেন্টের জন্য যে অনুমোদন লাগবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে এখানে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টের পরিবেশ নেই।

টিআই/এমএ