ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন এলাকার কাঁচা বাজারগুলোতে শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রবিধান করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ।

মঙ্গলবার (৩০ অগাস্ট) দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আয়োজিত ঢাকা সাউথ সিটি ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ফুড সিস্টেমের ১১তম বৈঠকে তিনি এ বিষয়টি জানান।
  
ফরিদ আহাম্মদ বলেন, সম্প্রতি আমরা একটা প্রবিধান করেছি। সেটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় হয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয় থেকে কিছু পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আমরা আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে সেগুলো যথাযথভাবে চিহ্নিত করব। আমরা আশাবাদী, আগামী ২ মাসের মধ্যে চূড়ান্ত একটি প্রবিধান পেয়ে যাব। এরপরে সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আমরা কাঁচা বাজারগুলোয় শৃঙ্খলা নিয়ে আসতে সক্ষম হব।

প্রবিধানের অভাবে এতদিন ঢাকা শহরের অধিকাংশ কাঁচা বাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা কষ্টসাধ্য ছিল উল্লেখ করে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, আমাদের তথ্য মতে ঢাকা শহরে কাঁচা বাজারের সংখ্যা চার শতাধিক। কিন্তু আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা বাজারের সংখ্যা খুবই কম। এটা পঞ্চাশেরও নিচে। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন-২০০৯ অনুযায়ী এটা সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব। এখানে বলা হয়েছে যে, প্রবিধান দ্বারা আমরা এই কার্যাবলী নিয়ন্ত্রণ করব। ইতোপূর্বে এই প্রবিধান করা হয়নি বলে বেসরকারি বাজারগুলোর নিয়ন্ত্রণ, তত্ত্বাবধান ও তদারকি করা সহজ ছিল না। কিন্তু প্রবিধান চূড়ান্ত হলে এই কার্যক্রম সহজতর হবে।

তিনি আরও বলেন, বাজার তদারকি ও নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশনের একটি স্থায়ী কমিটি রয়েছে। কিন্তু এককভাবে এই কমিটি তা পারবে না। আমরা আগে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, আমাদের স্থায়ী কমিটির পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, আমাদের স্যনিটারি পরিদর্শক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরসহ সরকারের অন্যান্য সংস্থা এবং এ খাত সংশ্লিষ্ট এনজিওগুলোর সমন্বয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি করা হবে। আমরা সবাই মিলে একসাথে কাজ করতে চাই। আশা করি সকলে মিলে ঢাকার কাঁচা বাজারগুলোর শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা যাবে।

জানা গেছে, নেদারল্যান্ডস সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ ঢাকা উত্তর, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকার জন্য ‘ঢাকা ফুড সিস্টেম ২০৪১’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করেছে। শহরের বাসিন্দাদের জন্য ২০৪১ সালে সাশ্রয়ী মূল্যে, উন্নতমানের খাবার সরবরাহের ব্যবস্থাপনা সৃষ্টির মাধ্যমে সরকারকে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি নেদারল্যান্ডসের ওয়াগেনিনজেন ইউনিভার্সিটি  অ্যান্ড রিসার্চের প্রযুক্তিগত সহায়তায় সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সাথে একটি প্রমাণভিত্তিক এবং সহযোগিতামূলক পদ্ধতিতে ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১ তৈরি করতে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করছে। এটি জাতিসংঘের খাদ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত শীর্ষ সম্মেলনের পরিকল্পনাগুলোকে বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।

ঢাকা ফুড সিস্টেম (ডিএফএস) প্রকল্পের সিটি কো-অর্ডিনেটর শরিফা পারভীনের সঞ্চালনায় বৈঠকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার জেভিয়ার বুন, করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর সিতওয়াত নাঈম, প্রকল্পের ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর জয়নাল আবেদিন, করপোরেশনের বাজার মূল্য পর্যবেক্ষণ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শহিদ উল্লাহ মিনু, ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এএসএস/এনএফ