ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ট্রানজিট চুক্তির আওতায় আরেকটি পরীক্ষামূলক চালানে কনটেইনার নিয়ে ‘এমভি ট্রান্স সমুদেরা’ নামের একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছে।

কনটেইনারবাহী জাহাজটি রোববার কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী বন্দর থেকে ছেড়ে আসে। চট্টগ্রাম বন্দরে আসা জাহাজ থেকে কনটেইনারগুলো বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে নিয়ে যাওয়া হবে।

বন্দরে জাহাজ আসার বিষয়টি নিশ্চিত করে ম্যাংগো শিপিং লাইনের ম্যানেজার হাবিবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ট্রানজিট চুক্তির আওতায় কনটেইনার নিয়ে আরেকটি পরীক্ষামূলক চালান চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে। এখন বন্দর থেকে কনটেইনারগুলো বের করার জন্য কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। পরে এগুলো সড়কপথে ভারতে পাঠানো হবে।

এদিকে ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইক‌মিশনও এক বিজ্ঞ‌প্তি‌তে চট্টগ্রাম বন্দ‌রে জাহাজ‌টি পৌঁছা‌নোর তথ‌্য নিশ্চিত ক‌রে‌ছে।

হাইক‌মিশন জানায়, কার্গোর এ চলাচল ২০১৮ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত পণ্য পরিবহনের জন্য চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার করার চুক্তিটি কার্যকর করার জন্য গৃহীত ট্রায়াল রানের অংশ। এ ট্রায়াল রান চট্টগ্রাম-শেওলা-সুতারকান্দি রুটে টাটা স্টিল এবং সিজে ডার্কল লজিস্টিকস লিমিটেড কর্তৃক পরিচালিত হচ্ছে ।

ভারতীয় হাইক‌মিশন বল‌ছে, আগামী কিছু দিনের মধ্যে ডাউকি-তামাবিল-চট্টগ্রাম রুটে একটি ট্রায়াল রান পরিচালনা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা এই চুক্তির অধীনে অনুমোদিত সমস্ত রুটে ট্রায়াল রান পরিচালনার সমাপ্তি নির্দেশ করবে। চল‌তি বছরের শুরুর দিকে দুই সরকারের মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছে, সে অনুযায়ী এ চুক্তির অধীনে পণ্যের পরিচালনা এবং নিয়মিত চলাচলের জন্য এ ট্রায়াল রানসমূহ পরিচালনা সমাপ্তির পরে বাংলাদেশ সরকার প্রয়োজনীয় স্থায়ী আদেশ বা বিজ্ঞপ্তি জারি করবে।

হাইক‌মিশন জানায়, চুক্তির অধীনে পণ্য পরিবহনের জন্য আটটি অনুমোদিত রুট রয়েছে, যথা, চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে আখাউড়া হয়ে আগরতলা, চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে তামাবিল হয়ে ডাউকি, চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে শেওলা হয়ে সুতারকান্দি, চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে বিবিরবাজার হয়ে শ্রীমন্তপুর এবং এর বিপরীতে চারটি রুটে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় চুক্তিটি কার্যকর করার জন্য একটি এসওপি সই হয়েছিল।

এ চুক্তির অধীনে চট্টগ্রাম-আখাউড়া-আগরতলা রুটে প্রথম ট্রায়াল রান ২০২০ সালের জুলাই মাসে সফলভাবে পরিচালিত হয়েছিল যেখানে চারটি কন্টেইনার, দুটি টিএমটি স্টিল এবং শস্যদানা, কলকাতা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে আইসিপি আগরতলায় পাঠানো হয়েছিল।

হাইক‌মিশন আরও জানায়, এ চুক্তির অধীনে পণ্যের ট্রানজিট বা ট্রান্সশিপমেন্ট ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের খরচ এবং সময় উভয়ই কমিয়ে দেবে। এটি বাংলাদেশের লজিস্টিকস এবং সার্ভিস ইন্ডাস্ট্রির (বিমা, পরিবহন ও ফিন্যান্স ইন্ডাস্ট্রি ইত্যাদি) জন্য অর্থনৈতিক লাভও সৃষ্টি করবে; কেননা, ট্রান্সশিপমেন্টের জন্য শুধুমাত্র বাংলাদেশের ট্রাক ব্যবহার করা হবে।

কেএম/এনআই/আরএইচ