জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, নারী ও পুরুষ উভয়ের স্বার্থে লিঙ্গ সমতা আনা জরুরি। প্রাণবন্ত গণতন্ত্র এবং টেকসই ও সুষম উন্নয়নের পূর্বশর্ত লিঙ্গ সমতা। অর্ধেক জনসংখ্যার পর্যাপ্ত প্রতিনিধিত্ব ছাড়া কোনো গণতন্ত্র সফল হতে পারে না। তাই আইনসভায় পুরুষ ও নারী উভয়ের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা দরকার। 

শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) উজবেকিস্তানের তাসখন্দে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় স্পিকার এ কথা বলেন।

‘পার্লামেন্টারি লিডারশিপ : অ্যান্টিসিপেটিং রিস্কস টু বেটার ডেলিভার সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড প্রসপারিটি’ থিমকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত ‘স্পিকার্স অব পার্লামেন্টের ১৪তম সামিট’র (১৪এস ডব্লিউ এস পি) দ্বিতীয় দিনে ‘উইথআউট জেন্ডার সেনসিটিভ পার্লামেন্ট জেন্ডার রেসপন্সিভ লজ  কেন নট বি এডপটেড’ শীর্ষক সেশনে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার বক্তৃতা করেন।
   
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন  বলেন, সব আইনপ্রণেতা এবং নন-জেন্ডার রেসপন্সিভ পার্লামেন্টকে অবশ্যই লিঙ্গ সমতাভিত্তিক আইন গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব সম্পর্কে জ্ঞানার্জন ও শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। লিঙ্গ সমতাভিত্তিক আইন নিশ্চিত করা সংসদ সদস্যদের অন্যতম দায়িত্ব বলেও তিনি উল্লেখ করেন। 

ওই সেশনে স্পিকার বলেন, সংসদই লিঙ্গ সমতাভিত্তিক আইন প্রণয়নের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জনের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সমতা, গণতন্ত্র এবং শান্তি আনতে লিঙ্গ সমতাভিত্তিক আইন প্রণয়ন প্রয়োজন। 

তিনি আরও বলেন, নারীদের সহিংসতা থেকে রক্ষাকারী আইন, বাল্যবিবাহ রোধে আইন, যৌতুক প্রতিরোধে আইন, কর্মজীবী নারীদের জন্য ডে-কেয়ার সেন্টারের বিধান এবং আরও অনেক যুগান্তকারী উদ্যোগ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জাতীয় সংসদে নেওয়া হচ্ছে। 

তিনি বলেন, লিঙ্গ সমতা, নারীর অধিকার এবং নারীর ক্ষমতায়নকে সীমাবদ্ধ রাখা অনুচিত। মানবতার বৃহত্তর উপকারিতা অর্জনে সংসদসহ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের একইসঙ্গে অংশগ্রহণ বাঞ্চনীয়।

সিনেট অব উজবেকিস্তনের চেয়ার উইমেন তানজিলা নারবিভার সভাপতিত্বে এই সেশনে সিনেট অব জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট মেবেল এম সিনোমোনা, কাউন্সিল অব রিপাবলিক অব বেলারুশের স্পিকার নাটালিয়া কোসানোভাসহ বিভিন্ন দেশের জাতীয় সংসদের স্পিকাররা তাদের বক্তব্য রাখেন এবং বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্য ও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রণ করেন। 

বাংলাদেশের সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন, পারভীন হক সিকদার ও আদিবা আনজুম মিতা, উজবেকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জাহাঙ্গীর আলম, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম, যুগ্মসচিব সুমিয়া খানম ও সার্জেন্ট এট আর্মস মিয়া মোহাম্মদ নাঈম রহমান সামিটে অংশগ্রহণ করেন।

এই সেশনে বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তি ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
 
জেডএস