দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সারাদেশের মণ্ডপগুলোতে পূজা শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্থায়ীভাবে আনসার সদস্য রাখা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। 

রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দুর্গাপূজা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় তিনি এ কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, এবার সব মণ্ডপে আনসার স্থায়ীভাবে থাকবে। আমরা বলেছি, প্রতিটি মণ্ডপে সিসিটিভি থাকতেই হবে। নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক থাকবে। পাশাপাশি, ভ্রাম্যমাণ আদালতও তৎপর থাকবে।

তিনি বলেন, ‘এবার সব মণ্ডপেই আনসার স্থায়ীভাবে থাকবে। তারা (মণ্ড কর্তৃপক্ষ) থাকার ব্যবস্থা করে দেবেন। দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি এবার গতবারের চেয়ে মণ্ডপের সংখ্যা বেশি। আমরা বিস্তারিত আলোচনা করে কতগুলো সিদ্ধান্তে এসেছি। ১ থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এবার ৩২ হাজার ১৬৮ মণ্ডপে পূজা হবে। আমি অনুরোধ করেছি এটা যাতে আর বৃদ্ধি না পায় বরং যদি কমে তাহলে আমাদের জন্য সুবিধা। এসব মণ্ডপে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী, এটা পুলিশ হতে পারে আনসার হতে পারে, যেখানে যেটা প্রয়োজন সেভাবে ব্যবস্থা করা হবে। মণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্বেচ্ছাসেবক রাখা হবে। তাদের যেন আর্মড ব্র্যান্ড থাকে এটা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে, যাতে করে আমরা বুঝতে পারি কারা স্বেচ্ছাসেবক। বড় মণ্ডপে নিরাপত্তা বাহিনী টহলে থাকবে। মণ্ডপে আসা নারী এবং শিশুদের ইভটিজিং ও মাদক সেবন বা যে কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা রোধে মণ্ডপ কর্তৃপক্ষ স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগীতা নেবেন।’

আরও পড়ুন : আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধান করবো

যে কোনো ইমার্জেন্সিতে ৯৯৯ এ ফোন করতে বলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রতি মণ্ডপে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা পথ রাখতে হবে। এটাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজান-নামাজের সময় মসজিদের পাশ্ববর্তী পূজামণ্ডপগুলোতে পূজা চলাকালীন এবং বিসর্জনের সময় শব্দযন্ত্রের ব্যবহার সীমিত রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে। পূজা মণ্ডপে জুয়া ও মাদক নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দুস্কৃতিকারীদের অশুভ তৎপরতা রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত সক্রিয় থাকবে। মণ্ডপে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করার জন্য আলোচনা করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার গুজব রোধে এগুলো মনিটরিং করা হবে। কেউ এ ধরনের অপচেষ্টা করলে কঠোর অবস্থার মুখোমুখি হতে হবে বলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গতবারও ব্যবস্থা নিয়েছিলাম কিন্তু আমাদের কথা মানা হয়নি। গত বছর শারদীয় দুর্গোৎসবে কুমিল্লায় যে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটেছিল সরকারের নির্দেশনা মানলে তা হতো না। আজকে মিটিংটা সে কারণেই। বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। এখানে হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান সবাই মিলেই এ দেশ। আমরা মনে করি বঙ্গবন্ধুর সেই আদর্শের সেই দেশে কেউ পূজা করতে পারবে না, বড়দিন করতে পারবে না, বৌদ্ধ পূর্ণিমা হবে না কিংবা মুসলমানদের ধর্মকর্মে কেউ বাধা দেবে এটা হতে দেওয়া হবে না। সবাই যার যার ধর্ম পালন করবে।’

এসএইচআর/ওএফ