বাংলাদেশ থেকে এমবিবিএস ও অন্যান্য ডিগ্রি অর্জনকারী ফিলিস্তিন ও জর্ডানের নাগরিকদের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে অভিহিত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

আম্মানে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে বাংলাদেশ থেকে এমবিবিএস ও অন্যান্য উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করা ফিলিস্তিন ও জর্ডানের ডাক্তারদের সম্মানে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন ব‌লে রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থে‌কে পাঠা‌নো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানা‌নো হয়।

ড. মো‌মেন ব‌লেন, বাংলাদেশ সরকার প্রতি বছর শিক্ষা খাতে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য ফিলিস্তিনের ছাত্রদের নিয়মিতভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নের সুযোগ দিয়ে থাকে। এসব শিক্ষার্থী বিশ্বের অন্য দেশে উন্নত বাংলাদেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরবেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সবসময়ই ফিলিস্তিন ইস্যুতে এবং জর্ডানের প্রতি সহযোগিতার মনোভাব পোষণ করে আসছে। ১৯৭১ সালে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। প্রায় দুইশ বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে অবশেষে আমরা মুক্তি পেয়েছি। সেজন্য একটা অধিকৃত দেশ ও জাতির কষ্ট ও দুর্দশা আমরা ভালোভাবে অনুধাবন করতে পারি।

আরও পড়ুন: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিনন্দন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘে দেওয়া তার প্রথম ভাষণে ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। তার আগেও ১৯৭৩ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু দ্ব্যর্থহীন ভাষায় আরবদের সমর্থন করেন এবং চিকিৎসা সহায়তার জন্য চিকিৎসক দল প্রেরণ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ফিলিস্তিন ও জর্ডানের নাগরিকদের উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনের কারণে আপনারা অন্য অনেক দেশের নাগরিকদের তুলনায় বাংলাদেশকে ভালোভাবে জানার ‍সুযোগ পেয়েছেন। আপনারা আপনাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় বাংলাদেশে অতিবাহিত করেছেন। সেজন্য আমরা আপনাদের প্রকৃত বন্ধু বিবেচনা করি এবং বিশ্বাস করি, আপনারা আমাদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকবেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জর্ডানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাহিদা সোবহান সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ফিলিস্তিন ও জর্ডানের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। উভয় দেশই তাদের স্বল্প সম্পদ ও সীমিত ব্যবস্থাপনা সত্ত্বেও বিশ্ব দরবারে নিজস্ব স্থান করে নিয়েছে। ভ্রাতৃপ্রতিম এই দুই দেশ পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে।

রাষ্ট্রদূত ব‌লেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ আজ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তি, নারীর ক্ষমতায়ন ইত্যাদিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তিনি বাংলাদেশ থেকে শিক্ষা সম্পন্ন করা সবাইকে বাংলাদেশের প্রকৃত ভাবমূর্তি বিশ্বের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ থেকে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করা জর্ডানের পেশাজীবীরা বাংলাদেশে অবস্থানকালীন সময়ে তাদের সুখ স্মৃতি রোমন্থন করেন। তারা জানান, বাংলাদেশকে কাছ থেকে দেখতে পারা তাদের জন্য এক বিরল সৌভাগ্য। বাংলাদেশের মানুষের প্রাণ-প্রাচুর্য ও আতিথেয়তার অভিজ্ঞতা তাদের জন্য এক স্মরণীয় স্মৃতি।

প্রায় তিন যুগ পর সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করে আসা ডাক্তার ইউসুফ বলেন, আগামীর ভবিষ্যৎ কেবল বাংলাদেশের। তিনি বিগত দশকে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বের ফলে বাংলাদেশ একটি সফল সম্ভাবনাময় রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের কাছে উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

এনআই/এসএসএইচ