আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের চূড়ান্ত পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন আগামী সংসদ নির্বাচনের অর্ধেক আসনের ভোটগ্রহণ ইভিএমে করতে চায়।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ইসি ঘোষিত নির্বাচনী রোডম্যাপে বা কর্মপরিকল্পনায় এ বিষয়টির পুনরায় উল্লেখ করা হয়েছে।

কমিশন জানায়, সিটি করপোরেশন ও জেলা সদরের আসনগুলোতে ইলেকট্রনিক ভোটিং যন্ত্র ব্যবহারে প্রাধান্য দেওয়া হবে।  

ইভিএমের পক্ষে ইসির যত যুক্তি

বায়োমেট্রিক যাচাই করে ভোট দেওয়ার সিস্টেম থাকায় জাল ভোট অর্থাৎ একজনের ভোট অন্যজনের দেওয়ার সুযোগ নেই; ওয়ান টাইম চিপস ব্যবহার ও এমবেডেড পার্টস থাকায় একইসঙ্গে একজন ভোটার একাধিক ভোটও দিতে পারে না; একই ইভিএম বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনে ব্যবহার করা হয় বিধায় প্রোগ্রামের জালিয়াতি করা সম্ভব নয়; বিল্ট ইন ঘড়ি থাকায় নির্বাচন সময় আরম্ভ হওয়ার আগেও ভোট দেওয়া যায় না, একইভাবে সময় শেষ হলে প্রিজাইডিং অফিসার বন্ধ বাটনে চাপ দিলে এরপরে ভোট দেওয়ার কোনো সুযোগ থাকে না; ভোট গণনা করতে হয় না, বাটনে চাপ দিলেই ফলাফল পাওয়া যায়; ব্যালটে ভোট হলে কেন্দ্র দখল করে ভোটের আগে পরে ইচ্ছামত বাক্সে ব্যালট ভর্তি করা সম্ভব কিন্তু ইভিএমে এ ধরনের অন্যায় করার কোনো সুযোগ নেই।

ইভিএম এ ভোট ম্যানুপুলেশনের বিষয়টি কেউ এখন পর্যন্ত প্রমাণ করতে পারেননি। ইভিএমে কারচুপি করা সম্ভব এমন প্রমাণ কেউ দিকে পারেনি; একাদশ সংসদ নির্বাচনে ইভিএমে ৪৪ থেকে ৬২ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে; জাতীয় সংসদের উপ-নির্বাচনে ১২টি আসনে ২৭.০৫ শতাংশ, ৬টি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৩৮.৩৭ শতাংশ, ১৯টি উপজেলায় ২৮.৯৫ শতাংশ, ১৭১টি পৌরসভায় ৫৮.৭০ শতাংশ এবং ৫১৮টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৬৮.৭২ শতাংশ; সিটি কর্পোরেশনগুলোর নির্বাচন হয়েছিল দেশে তখন করোনার প্রবল সংক্রমণ ছিল।

ভোটাররা সফলভাবেই ইভিএমে ভোট দিতে সক্ষম হচ্ছে; আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে ভোটারদের সমস্যা হলেও ভোট দিতে তাদের কোনো সমস্যা হয় না। ইভিএম ভোট যেমন সুষ্ঠু ও সঠিক হয় তেমনি কোন প্রকার জাল-জালিয়াতির সুযোগ থাকে না।

ইসি রোডম্যাপে উল্লেখ করেছে, নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে সংলাপে অংশগ্রহণকারী ২৯টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ইভিএমের পক্ষে মত দিয়েছে ১৭টি রাজনৈতিক দল। বিপক্ষে মত দিয়েছে ১২টি দল। বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলের মত ইভিএমের পক্ষে থাকায় ইভিএম ব্যবহার না করা যুক্তি সঙ্গত হবে না বলে কমিশন মনে করেন। উভয় পক্ষের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে তাই কমিশন ১৫০টি আসনে ইভিএম ব্যবহার করা যুক্তিসঙ্গত বলে মনে করে নির্বাচন কমিশন।

এসআর/এসকেডি