পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দারিদ্র্যের তারতম্য গভীর ও কঠিন একটা বিষয়। এটি নানা কারণেই কঠিন হয়েছে। তবে আমাদের দেশের পণ্ডিতরা এটা নিয়ে জানে ও লেখে, কিন্তু কিছু করতে পারে না। কারণ দারিদ্র্য নিরসনের যন্ত্র পণ্ডিতদের হাতে নেই।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) নগরীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ‘মাল্টি-স্টেক হোল্ডার ন্যাশনাল ওয়ার্কশপে’ অংশ নিয়ে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ’অসাম্য-অবিচার সর্বত্রই ভয়ঙ্কর অবস্থা। দারিদ্র্য নিরসনের যন্ত্র যাদের হাতে তারা এটাকে কাজে লাগায় না, ভোগ করে। এসব লেখার কারণে পণ্ডিতদের বাহবা-পুরস্কার দেওয়া হয়। আমি মনে করি একজন নাগরিক হিসেবে বিধিবদ্ধ অন্যায় আছে এই দেশে। আমাদের দেশে আইনের মধ্যেও অন্যায় আছে।’

তিনি বলেন, ‘ইংরেজ ও এনজিও’র ভাষায় বিউটিফুল এক্সপ্লেনেশনও আছে। আসলে কাজ কোথায়? আমাদের সরকার জনগণের জন্য কাজ করছে। গ্রামের মানুষের ভাগ্য বদলাতে কাজ করছি। যখন ১০ বছরের শিশু ছিলাম, তখন সাঁতরিয়ে স্কুলে যেতাম। কিন্তু এখন অনেক পরিবর্তন দেখি। আমাদের সরকার অনেক কাজ করেছে। গ্রামে আশ্বিন-কার্তিক মাসে কলেরা ও দারিদ্র্য আসতো, কারণ পুকুর-নদীর পানি খেতাম। বিশাল গ্রামে একটা বা দুইটা নলকূপ ছিল। আমি পুকুরের পানি খেয়েছি, আমার মায়ের পেটের বোনও কলেরায় মারা গেছে। কিন্তু এখন সুপেয় পানি খাচ্ছি। সেই কলেরার প্রকোপ নেই। সরকার গ্রামের মানুষের জন্য কাজ করছে। এক সময় পোলিও ভয়ঙ্কর অবস্থায় ছিল। এখন অনেক উন্নত হয়েছে, আমাদের আয়ু বেড়েছে।’

সমাজে এখনও অন্যায় আছে দাবি করে এম এ মান্নান বলেন, ‘তবে মূল জায়গায় আমরা এখনো হাত দিতে পারিনি বা পৌঁছাইনি। বিধিবদ্ধ অবিচার রয়েছে এখানে হাত দিতে পারিনি। যেমন গ্রামের জলাশয়ের মূল মালিক স্থানীয় জনগণ। কিন্তু এটা এখন ইজারা দেওয়া হয়, প্রশাসন এ কাজে সহায়তা করে। যে লোকটা পলুই দিয়ে মাছ মেরে খেত, সে এখন খেতে পারে না। তার কিনে খাওয়ার ক্ষমতাও নেই। গ্রামে আমরা সবাই ছোট মাছ ধরতাম। কেউ জাল দিয়ে মাছ ধরতাম। আমিও মাছ ধরতাম। কিন্তু মজার বিষয় হলো এখন গ্রামে কেউ মাছ ধরে না। আইন করে এটা বন্ধ করা হয়েছে। এটা কতটুকু যৌক্তিক?’

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা, ব্র্যাক বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান ও সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত মুন্নাসহ সংশ্লিষ্টরা কর্মশালা অংশ নেন।

এসআর/এসএম