জাল নোট তৈরি ও বিক্রি করা চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগ। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা জব্দ করা হয়েছে।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা ও গাজীপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন, মো. মজিবুর রহমান (৩৫), মো. শাকিল রহমান ওরফে আ. রহমান (২৫), মো. রাসেল উদ্দীন ওরফে রাসেল সরদার (৩৪)। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ১ কোটি ২৫ হাজার টাকা মূল্যমানের জাল নোট জব্দ করা হয়। এছাড়া তাদের কাছ থেকে ১টি ল্যাপটপ, ১টি কালার প্রিন্টার, ২টি নাট, ২টি কবজা সংযুক্ত পারটেক্স বোর্ড, ১টি কাঠ এবং প্লাস্টিকের তৈরি বিভিন্ন সাইজের ৫টি ডাইস বোর্ড, বিভিন্ন রংয়ের ছোট কোটা ৬টি ও কিছু নিরাপত্তা সুতা জব্দ করা হয়।

আরও পড়ুন : এমপি পদে থাকতে পারবেন রাঙ্গা-পঙ্কজ, বলছেন আইন বিশেষজ্ঞরা

ডিবি জানায়, চক্রটি বিভিন্ন উৎসব, যেমন ঈদ ও দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে যখন বিভিন্ন মার্কেটে কেনাকাটা শুরু হয় তখন তারা এ জাল নোট বাজারে ছাড়ে। চক্রটি প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ লাখ টাকা মূল্যমানের জাল নোট তৈরি করে আসছিল। জব্দ করা বিপুল পরিমাণ জাল টাকার নোট চক্রটি আসন্ন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে মার্কেটে ছাড়ার পরিকল্পনা করছিল।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল রাজধানীর মিন্টু রোডে অবস্থিত নিজ কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান ডিবি প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন কুনিপাড়ায় শপিং ব্যাগে করে জাল টাকা হস্তান্তরের সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা মূল্যমানের জাল নোট জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তরা জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তাদের আরেক সহযোগী মামুন (২৪) গাজীপুরের গাছা এলাকায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে জাল টাকা কারখানা পরিচালনা করছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে কারখানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে মামুনকে পাওয়া যায়নি। তবে কারখানা থেকে ৯৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যমানের জাল নোটসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন : বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি, ‘না’-তে মত বেশি

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারদের নামে জাল টাকা তৈরির অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। তারা গত ১২ বছর ধরে জাল টাকা তৈরি এবং বিক্রির ব্যবসা করে আসছিল। এদের মধ্যে গ্রেপ্তার মজিবুর রহমান জানান, দেশে ১০-১৫টি জাল টাকার মার্কেটিং কোম্পানি রয়েছে। যারা ১ লাখ টাকা মূল্যমানের জাল নোটের বান্ডেল মান ভেদে ১০-১৫ হাজার অরিজিনাল টাকায় কিনে নেয়। মাসে তারা ৫০ থেকে ১ কোটি টাকা মূল্যমানের জাল নোট তৈরি করে আসছিল।

 

ডিবি প্রধান আরও বলেন, বিভিন্ন উৎসব যেমন ঈদ ও দুর্গাপূজার কেনাকাটার সময় আসলে তারা এ জাল নোটগুলো বাজারে ছেড়ে দেয়। তাদের মার্কেটিংয়ের লোক আছে। চক্রটি ১০ হাজার অরিজিনাল টাকায় এক লাখ টাকার সম-পরিমাণের জাল নোট মার্কেটিংয়ের লোকজনের কাছে বিক্রি করে। পরে মার্কেটিংয়ের লোকজন বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে এই জাল টাকার নোট বাজারে ছাড়ে। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এর আগেও আমরা জাল টাকা তৈরির চক্রের একাধিক সদস্যকে গ্রেপ্তার করি। তারা আমাদের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে জেলে গিয়েও তারা বাইরে থাকা চক্রের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে  ব্যবসা সচল রাখে। এছাড়া জেল থেকে বের হয়ে আবার আগের ব্যবসা শুরু করে।

এমএসি/এসকেডি