চট্টগ্রামে বেড়েই চলেছে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন আরও ১৫ জন। চলতি মাসে মঙ্গলবার পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ২২২ জন। এই বছর চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭১ জন।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামে সেপ্টেম্বর মাসে এসে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। গত জুলাই মাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫০ জন, আগস্টে তা বেড়ে হয়েছে ৭৬ জন। আর এই মাসে আজ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২২২ জন। যার মধ্যে নগরীর বাসিন্দা ১৭৫ ও উপজেলার ৪৩ জন। আর চার জন অন্য জেলায় আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামে চিকিৎসা নিয়েছেন। আমরা সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সংস্থাকে চিঠি দিয়ে মশা নিধনের বিষয়ে তাগাদা দিয়েছি।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, চট্টগ্রাম আজ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭১ জন। এর মধ্যে শিশু ১০০ জন, পুরুষ ১৭০ জন ও মহিলা ১০১ জন। চট্টগ্রামে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন পাঁচ জন, ফেব্রুয়ারিতে একজন। মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে কেউ আক্রান্ত হয়নি। জুন মাসে ১৭ জন, জুলাইয়ে ৫০ জন, আগস্টে ৭৬ জন ও চলতি মাসে ২২২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।

আরও জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীতে মোট ৩০৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন, বাকিরা বিভিন্ন উপজেলার। তবে চট্টগ্রামের আনোয়ারা, চন্দনাইশ ও মিরসরাই উপজেলায় কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়নি।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ১০ কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার

এদিকে, আজ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৩৭নং উত্তর মধ্যম হালিশহর মুনির নগর ওয়ার্ডে মশক নিধনে ক্র্যাশ প্রোগ্রামের উদ্বোধন করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আফরোজা কালাম।

এসময় তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সমন্বিত মশক নিধন পদক্ষেপটিই হচ্ছে পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা। আমাদের চার পাশের যেসব স্থানে এডিস মশা জন্ম নেয় সেসব স্থান সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে ধারণা দিতে হবে, যাতে এডিস মশা জন্মাতে না পারে এবং নগরবাসী সচেতন হয়। আবহাওয়াগত কারণে নগরীতে এখন মশার উপদ্রব বেড়েছে। এই ক্রাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রতিটি ওয়ার্ডের ঝোপ-ঝাড় পরিষ্কার করা হবে। নালা-নর্দমায় জমাটবদ্ধ পানিতে মশার প্রজনন বৃদ্ধি পায়, সেখানে ওষুধ ছিটানো হবে। ক্রাশ প্রোগ্রাম ছাড়াও চসিকের নিয়মিত কার্যক্রমের মধ্যে প্রতিদিন মশক নিধনে স্প্রে চলমান থাকবে।

ভারপ্রাপ্ত মেয়র আরও বলেন, পরিষ্কার ও বদ্ধ পানি এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র। তাই বাসা বাড়ির আশপাশে ডাবের খোসা, ফুলের টব, ছাদ বাগান, ফ্রিজের ট্রে, এসির জমা পানি, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিক বোতল ও পানির ড্রামে যাতে তিন দিনের বেশি সময় পানি জমে না থাকে সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।

ইতোমধ্যে চসিক জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ছাদ বাগান, নির্মাণাধীন ইমারতসহ বিভিন্ন বসতবাড়িতে অভিযান শুরু করেছে।

ভারপ্রাপ্ত মেয়র ক্র্যাশ প্রোগ্রাম উদ্বোধন শেষে জনসচেতনাতার লক্ষ্যে র‌্যালি, স্কুলের ছাত্রছাত্রী, দোকান, বাসাবাড়িতে লিফলেট বিতরণ করেন। পরে স্থানীয় আবাসিক এলাকার বিভিন্ন বাড়ির ছাদ বাগান পরিদর্শন করেন তিনি।

কেএম/এসএসএইচ