জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় দেশের হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোকে অবশ্যই মানসম্মত ও ভেজালমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান।

তিনি বলেন, দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে হোটেল-রেস্তোরাঁ। প্রায় ৩০ লাখ মানুষ কাজ করছে এ খাতে। যারা কাজ করছেন তাদের অধিকাংশই অদক্ষ, অশিক্ষিত বা স্বল্প শিক্ষিত। এ খাতকে টেকসই করতে হলে নানা সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য পরিবেশনের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় হোটেল রেস্তোরাঁগুলোকে অবশ্যই মানসম্মত ও ভেজালমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে।

ইমরান হাসান বলেন, মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে হবে। তরুণ প্রজন্ম যেন এ খাতে আসে সে বিষয়ে ইতিবাচক হতে হবে। বারাক ওবামার মেয়েও কিন্তু হোটেলে কাজ করেছে, তার সম্মান কি চলে গেছে? অনেকে আমাদের ছেলে-মেয়েদের এমবিবিএ-বিবিএ পড়ায়। দেখা যায়, তারা এসব ডিগ্রি নিয়ে বেকার থাকে। কিন্তু হোটেল ম্যানেজমেন্টে পড়ে কেউ বেকার থাকবে না, আমি কথা দিচ্ছি।  এ বিষয়ে পড়ে বিদেশেও বেশি টাকা আয় করা সম্ভব।

উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য শাহনওয়াজ দিলরুবা খান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা। বিশেষ অতিথি ছিলেন উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রি. জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান।

মালিকদের উদ্দেশে বক্তারা বলেন, রেস্তোরাঁ মালিকদের মুনাফার পেছনে না ছুটে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সবধরনের নিয়মনীতি মেনে চলবে হবে। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ভেজালমুক্ত খাবারের বিকল্প নেই। খাবার উৎপাদন থেকে শুরু করে পরিবেশন পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই ভেজালমুক্ত রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে আইনের চেয়ে নিজেদের সচেতনতাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। হোটেল রেস্তোরাঁ মালিকরা নজর দিলেই এ সমস্যা অনেকটাই সমাধান হবে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ফলে হোটেল রেস্তোরাঁর ওপর মানুষের নির্ভরতা বাড়ছে। কিন্তু  নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত না হওয়াসহ নানা কারণে সম্ভাবনাময় এ খাত থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। এ ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী এই খাতের উন্নয়ন ঘটানো প্রয়োজন।

বক্তারা আরও বলেন, হোটেল রেস্তোরাঁয় শিক্ষিত ও তরুণ জনশক্তিকে আগ্রহী করে তুলতে হবে। দেশের ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টারগুলোতে এ খাতের কোর্স অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এজন্য একটি নীতিমালা দরকার। এছাড়া বর্তমানে হোটেল রেস্তোরাঁগুলোকে তদারকি করছে ১২-১৩টি সংস্থা। ফলে অনেক ক্ষেত্রে মালিকরা হয়রানির শিকার হন। এ অবস্থায় একটিমাত্র নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা থাকলে সবদিক দিয়েই ভালো হবে। পাশাপাশি বিজিএমইএর মতো রেস্তোরাঁ মালিক সমিতিকে শক্তিশালী করতে হবে। ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে সমিতির মতামত নেওয়া দরকার।

এসআর/ওএফ