তাজরিয়ান মোস্তফা মৌমিতা

রাজধানীর ধানমন্ডিতে বাসার ছাদ থেকে পড়ে শিক্ষার্থী তাজরিয়ান মোস্তফা মৌমিতার (২০) মৃত্যুর ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে। তিনি মালয়েশিয়ার এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতেন।

ওই বাড়ির মালিকের ছেলে ফাইজারসহ আরও কয়েকজনকে সন্দেহভাজন আসামি করে সোমবার (১ মার্চ) রাত ৮টার কলাবাগান থানায় মামলাটি করেছেন মৌমিতার বাবা শামীম। ঢাকা পোস্ট-কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিতোষ চন্দ।

তিনি বলেন, মৌমিতার বাবা এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। এই মামলায় ফাইজারসহ আরও কয়েকজনকে সন্দেহবাজন হিসেবে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বাড়ির মালিকের ছেলের বন্ধু আমাদের হেফাজতে ছিল। তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

মৌমিতার পরিবারের অভিযোগ

মৌমিতারা তিন বোন, এর মধ্যে সে মেজ। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পড়ালেখা করার জন্য মা-বাবাসহ সেখানে চলে যান মৌমিতা। কিন্তু করোনার কারণে গত বছরের ১৮ জুন দেশে আসেন। দেশে এসে ধানমন্ডির ওই বাসাটিতে ওঠেন।

পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দেশে আসার পর থেকে ফাইজার বিভিন্ন সময় মৌমিতাকে উত্ত্যক্ত করতেন। ফাইজারের পরিবারকে এ বিষয়ে একাধিকবার অভিযোগ করা হলেও তারা কোনো প্রতিকার করেনি। উল্টো এ বিষয়ে ফাইজারের পরিবার ছেলের পক্ষ নিয়ে কথা বলেছেন।

এ বিষয়ে মৌমিতার ফুফু শাহনেওয়াজ খানম ঢাকা পোস্ট-কে বলেন, মৌমিতাকে ছাদে কিংবা সিঁড়িতে একা পেলেই ফাইজার তার বন্ধুদের নিয়ে উত্ত্যক্ত করতেন। ঘটনার দিন বিকেল ৪টায় মৌমিতা যখন ছাদে ওঠে তখন ফাইজার ও তার বন্ধুরা ছাদের গেট (দরজা) আটকে দেয় বলে আমরা জানতে পেরেছি। এরপরই মৌমিতার মরদেহ পাওয়া যায়। এছাড়া আশপাশের অনেক ভবনের লোকজন দেখেছিল, ঘটনার দিন বিকেলে ৪-৬টা পর্যন্ত ছাদে অনেক লোকজন ছিল। কিন্তু পুলিশ ফাইজারকে আটক না করে তার বন্ধুকে আটক করেছে। ফাইজারকে আটক করলে সব তথ্য পাওয়া যাবে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় ধানমন্ডির ৮ নম্বর রোডের বাসার ছাদে ওঠেন মৌমিতা। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিল্ডিংয়ের পেছনের গলিতে তাকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। উদ্ধার করে গ্রিন রোডের গ্রিন লাইফ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সবশেষ শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ময়নাতদন্ত শেষে মৌমিতার মরদেহ মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় শনিবার আদনান নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ। যাকে মামলার পর গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

এমএসি/এফআর