বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় ও দেশি-বিদেশি মুদ্রা পাচারের অভিযোগে সাইফুর আকন ওরফে নাসির (৩৭) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি বলছে, সাইফুল বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় ও দেশি-বিদেশি মুদ্রা পাচারকারী চক্রের মূলহোতা।

সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. হুমায়ুন কবির জানান, গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর দক্ষিণখান থানার মামলায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী-২০১৫) এর ৪(২) ধারায় একটি মামলা হয়। ওই মামলার মূল আসামি সাইফুল। মামলা তদন্ত করছিল সিআইডি।

অর্গানাইজড ক্রাইমের ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের একটি দল রোববার (২ অক্টোবর) রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সাইফুর আকন ওরফে নাসিরকে গ্রেপ্তার করে। তিনি মাদারীপুর শিবচরের চর সেমাইলের ৪নং ওয়ার্ডের আব্দুল হক আকনের ছেলে।

আরও পড়ুন : ক্রেডিট কার্ডে গ্রাহকের সোয়া ৩ কোটি টাকা লুটপাট!

মামলার বরাতে এ কর্মকর্তা জানান, ভুক্তভোগী মামলার বাদী আবু ইউসুফ (২৬) গ্রীসে অবস্থানকালে অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা তাকে অপহরণ করে ৭/৮ দিন আটক রেখে বাংলাদেশে অবস্থানরত ভিকটিমের বড় ভাই সজল ইসলাম ও তার মা সালমা বেগমের কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে।

দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভিকটিমের বড় ভাই ও তার মা ২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর অপহরণকারীদের দেওয়া ব্যাংক হিসাবে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ হিসেবে দেন। মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার পর ভিকটিমের মা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ম্যানেজার বরাবর লিখিত অভিযোগ করলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করে। বিষয়টি অনুসন্ধান করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক সিআইডি সদর দপ্তরে একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন পাঠায়।

প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম শাখা অভিযুক্ত ব্যাংক হিসাবটির হিসাব বিবরণী নিয়ে অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করে। অনুসন্ধানে অভিযুক্ত ব্যাংক হিসাবে মুক্তিপণের টাকা গ্রহণের সত্যতাসহ হিসাবটিতে বিভিন্ন সময়ে দেশি-বিদেশি মুদ্রা পাচারের ২৬ লাখ ৫১ হাজার টাকা লেনদেনের তথ্যসহ একটি চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়, এর পরিপ্রেক্ষিতে মামলা হয়। রোববার রাতে মামলার মূল আসামি পলাতক সাইফুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ইতোমধ্যে মামলাটি তদন্ত শেষে আসামি সাইফুর আকনসহ তিন জনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার মো. হুমায়ুন কবির।

জেইউ/এসএসএইচ