ভ্যাট গোয়েন্দাদের অভিযান

আমদানিকারক তানাজ এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা কর ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। কর ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা করা হয়েছে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে মঙ্গলবার (২ মার্চ) ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, কর ফাঁকির অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ অনুযায়ী মামলা করা হয়েছে। টাকা আদায়ের আইনানুগ কার্যক্রম নেওয়ার জন্য মামলাটি কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা উত্তরে পাঠানো হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমদানিকারকের দ্বিগুণ জরিমানা হতে পারে।

ভ্যাট গোয়েন্দা জানায়, একজন গ্রাহক সুনির্দিষ্ট কর ফাঁকির অভিযোগ করায় ভ্যাট গোয়েন্দা দল প্রতিষ্ঠানের নাখালপাড়া কার্যালয়ে অভিযান চালায়। সংস্থার উপপরিচালক নাজমুন নাহার কায়সার অভিযানটি পরিচালনা করেন। প্রতিষ্ঠানটি হলো তানাজ এন্টারপ্রাইজ। এ আমদানিকারকের বিরুদ্ধে আইসিডি কাস্টম হাউস দিয়ে ব্যাটারির একটি চালানে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য খালাসের অভিযোগ রয়েছে।

ভ্যাট গোয়েন্দার অভিযানকালে দেখা যায়, নাখালপাড়ার একটি ভবনের নবম তলার একটি কক্ষে প্রতিষ্ঠানটির অফিস যা তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল। ভবনের সিকিউরিটি গার্ড জানান প্রতিষ্ঠানটির মালিক একই ভবনের সপ্তম তলায় থাকেন। গোয়েন্দা দল ঐ তলায় গিয়ে সরকারি কাজে সহযোগিতা চাইলে প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষ এতে সাড়া দেয়নি। সরকারি কাজে অসহযোগিতার কারণে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের পুলিশের সহায়তা নেওয়া হয়। অভিযানকালে প্রতিষ্ঠানের অফিস কক্ষে রাখা বাণিজ্যিক কাগজপত্রাদি জব্দ করা হয়। 

স্থানীয় ভ্যাট সার্কেল অফিস ও অন্যান্য সূত্রে প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের কর সংক্রান্ত দলিলাদি সংগ্রহ করা হয়। এসব দলিলাদি পর্যালোচনা শেষে ভ্যাট গোয়েন্দা দল এ আমদানিকারকের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির প্রমাণ পায়। ভ্যাট গোয়েন্দার তদন্ত অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ উপকরণ-উৎপাদন সহগ দাখিল না করে ২০১৯ সালের নভেম্বর  হতে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১ বছরে ১ কোটি ৩৫ লাখ ৩৯ হাজার ৯৪৮ টাকা রেয়াত গ্রহণ করে, যা মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৪৬ মোতাবেক অবৈধ।

এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি ৯ মাসে ২ কোটি ৬৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৬১ টাকার পণ্য সরবরাহ করে। যেখানে ফাঁকি ৩৯ লাখ ৮১ হাজার ৬৬১ টাকা। তদন্তে অবৈধ রেয়াত ও সুদ বাবদ মোট ১ কোটি ৮০ লাখ ১১ হাজার ৫৯০ টাকার কর ফাঁকি উদঘাটন করা হয়েছে।

আরএম/আরএইচ