দক্ষিণ সিটির ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে চালু হলো কৃষকের বাজার
এলাকাবাসীর জন্য স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ খাদ্যের জোগান দিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের টিকাটুলিতে প্রতি শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বসবে কৃষকের বাজার। সাভারের তেুঁতলঝোড়া থেকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যাচাই করা ১০ জন নিরাপদ চাষি তাদের উৎপাদিত সবজি এবং ফলমূল এ বাজারে বিক্রি করবেন। আজ থেকে এই বাজার চালু হয়েছে।
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সম্মিলিত উদ্যোগে দক্ষিণ সিটির ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের টিকাটুলিতে কৃষকের বাজার উদ্বোধন করা হয়।
বিজ্ঞাপন
আয়োজকরা জানান, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে কৃষির গুরুত্ব অপরিসীম। কৃষি প্রধান দেশ হলেও কৃষকরাই এ দেশে সবচেয়ে অবহেলিত। বর্তমান বাজার ব্যবস্থায় মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাবের কারণে কৃষকরা খুব অল্প মূল্যে পণ্য বিক্রি করেন। অথচ ভোক্তারা পণ্যটি কয়েকগুণ বেশি দামে খুচরা বাজার থেকে কেনে। কয়েকটি হাত ঘোরার ফলে অনেকটা সময় ব্যয় হয়। এসময়ে পণ্য তাজা রাখতে গিয়ে প্রচুর রাসায়নিক ব্যবহার হয়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। ভোক্তার জন্য নিরাপদ খাদ্য ও কৃষকের জন্য পণ্যের সঠিক মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে কৃষকের বাজার একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ।
আরও পড়ুন: ফুটপাত দখল করে গড়ে তোলা ৩০ দোকান উচ্ছেদ
বিজ্ঞাপন
বাজারটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রোকন উদ্দিন আহমেদ বলেন, গত ৫০ বছরে দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়লেও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। উৎপাদন থেকে বাজারজাতকরণ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে রাসায়নিক মেশানো হয়। কৃষকের বাজারে সরাসরি কৃষক তার উৎপাদিত নিরাপদ খাদ্য ভোক্তার কাছে পৌঁছে দেবেন। কার্যক্রমটি আরও বিস্তৃত আকারে গ্রহণ করার মাধ্যমে এলাকাবাসীর নিরাপদ খাদ্যের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের ফুড সিস্টেম পলিসি ইকনোমিস্ট পেদ্রো আন্দ্রেস গার্জন ডেলভো বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বিশ্বব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কৃষকের বাজার কার্যক্রমের উদ্দেশ্য হলো ভোক্তাদের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা এবং কৃষকদের জীবনমান উন্নয়ন করা। ঢাকা মহানগরে ১৬টি কৃষকের বাজার স্থাপিত হচ্ছে। টিকাটুলির কৃষকের বাজারে ১০ জন কৃষক তাদের উৎপাদিত নিরাপদ সবজি বিক্রি করবেন। বাজারটি এলাকাবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য রাখতে হলে নিরাপদ খাদ্যের সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করা আবশ্যক।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণের কারণে আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগব্যাধি বাসা বাঁধে। নিরাপদ খাদ্য গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি। বর্তমানে কৃষকদের প্রশিক্ষণ, বীজ, জৈবসারসহ বিভিন্ন সহায়ক উপকরণ প্রদান করা হচ্ছে। বিপণন ও ব্যবসার ক্ষেত্রে কৃষকদের দুর্বলতা রয়েছে। এক্ষেত্রে কৃষকের বাজারের মতো কার্যক্রম, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হলে কৃষকরা উপকৃত হবেন।
এএসএস/এসএসএইচ