নির্বাচনের আগে হয়রানিমূলক মামলার কোনো প্রশ্নই আসে না। আমরা কখনো এ ধরনের নির্দেশ দেবো না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনিনরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব আক্তার হোসেন।

শনিবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেশের সব জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের মতবিনিময়ে অংশগ্রহণ করে তিনি এ কথা বলেন। সকাল ১০টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে তিন ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনিনরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব আক্তার হোসেন বলেন, ‘জেলা পরিষদ ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভবিষ্যতে যে নির্বাচনগুলো হবে তা শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের বিষয়ে আলাপ হয়েছে। ডিসি-এসপিরা পরামর্শ দিয়েছেন। তারা তাদের অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য আমরা মাঠপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে বলেছি। সব মানুষের জন্য যেন মৌলিক অধিকার সঠিকভাবে সংরক্ষণ হয় তা নিশ্চিত করতে বলেছি। কারো মধ্যে যেন ভ্রান্ত ধারণা তৈরি না হয় যে পক্ষপাতমূলক কার্যক্রম হচ্ছে। বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনে ভোট সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য।’

গতবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৪০ হাজারের মতো ভোট কেন্দ্র ছিল উল্লেখ করে সিনিয়র সচিব বলেন, আগামী নির্বাচনে এ ভোট কেন্দ্র বেড়ে প্রায় ৪৩ হাজারের ওপরে হয়ে যাচ্ছে। আমরা বলেছি, কমিশন যেন নির্দেশনা দেন যে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ মাঠ প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ভোট কেন্দ্র পরিদর্শনের। আর যে জায়গাগুলাতে সুরক্ষিতভাবে ভোটগ্রহণ করা যাবে সেটা রেখে যেখানে অপ্রয়োজনীয় ভোট কেন্দ্র রয়েছে সেগুলোর পরিবর্তে প্রতিটি ইউনিয়নে যৌক্তিক সংখ্যক ভোট কেন্দ্র নির্ধারণ করার কথা বলেছি। যাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঠিকভাবে মোতায়েন করা যায়।

একটি ইউনিয়নে ৯/১০টি বা তার থেকেও বেশি ভোট কেন্দ্র রয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রের যে সংখ্যা তাতে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা যায় না। এজন্য আমরা চাচ্ছি ভোট ভেন্যুর সংখ্যা কমিয়ে বুথ বাড়িয়ে দিতে। এখন যেহেতু যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। কাজেই ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করে যৌক্তিক সংখ্যক করা হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করা সম্ভবপর হবে।

ভোটকে কেন্দ্র করে অনেক জায়গায় সামাজিক গুজব তৈরি হচ্ছে উল্লেখ করে সিনিয়র সচিব বলেন, এগুলো আমরা মাঠপ্রশাসনকে দেখতে বলেছি। যেখানে প্রশ্নের উদ্বেগ হয় সেখানেই যেন তারা কাজ করেন।

নির্বাচন কমিশনের যে কোনো পর্যায়ের ভোট সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য আদেশ-নির্দেশ বাস্তবায়নে জননিরাত্তা বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, কোনো রকমের পক্ষপাতমূলক আচরণ যেন না হয় তা আমরা এনশিয়র করবো। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠ প্রশাসনে রদবদল হয় না। এটি রুটিন ওয়ার্ক। কিছুদিন আগে পদোন্নতির কারণে আমরা ৪০টি জেলায় নতুন এসপি নিয়োগ দিয়েছি। ওই এসপিদের আমরা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে বলেছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হয়রানিমূলক মামলার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়নি। তবে হয়রানিমূলক মামলার সুযোগ নেই। এর প্রশ্নই নেই। আমরা কখনো এ ধরনের নির্দেশ দেবো না।

এসআর/এসএম