কঙ্কাল মুখোশ পরে ও তামাকজনিত মৃত্যুর প্রতীকী লাশের কফিন নিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো ও স্কুল ছাত্ররা।

শনিবার (১৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান), অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা) এবং প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠন আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়। মানববন্ধন শেষে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার কথা রয়েছে।

প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জোবায়ের বলেন, বাংলাদেশে বছরে তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায়। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে যত দেরি হবে তামাকজনিত মৃত্যু ততই বাড়তে থাকবে। তামাকের ব্যবহার হ্রাসে সংশোধনীর মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে খসড়া সংশোধনী প্রস্তুত হয়েছে। ওয়েবসাইটে প্রকাশ এবং অংশীজনের মতামত গ্রহণের কাজও শেষ হয়েছে। কিন্তু তামাক কোম্পানিগুলো সরকারের এই মহতী উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করতে নানা ভিত্তিহীন ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে।

আরও পড়ুন : জনস্বার্থে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের সুপারিশ

অধ্যাপক বজলুর রহমান বলেন, সরকার জনগণের জন্য, ব্যবসায়ীদের জন্য নয়। তাই জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অবিলম্বে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন করুন। যাতে ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করা যায়। ২০৪০ সাল বেশি দূরে নয়।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৩৫.৩ শতাংশ (৩ কোটি ৭৮ লাখ) তামাক ব্যবহার করে। দেশে তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু ও অসুস্থতায় বছরে ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়, যা তামাক খাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের চেয়ে অনেক বেশি।

বক্তারা জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনীতে যেসব প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে— পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান রাখার বিধান বিলুপ্ত করা, বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য বা প্যাকেট প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা, সব ধরনের খুচরা বা খোলা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট, ড্যাপিং, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টসহ এ ধরনের সব পণ্য উৎপাদন আমদানি, ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা এবং তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট বা মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৯০ শতাংশ করা।

মানববন্ধনে প্রত্যাশার সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সিটিএফকের লিড কনসালটেন্ট মোস্তাফিজুর রহমান, আত্মার কো- কনভেনর নাদিরা কিরন, আতাউর রহমান মাসুদ, মঞ্জুর হোসেন ঈসা।

এছাড়া ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন, ডরপ, বিসিসিপি, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, নাটাব, আর্ক ফাউন্ডেশন, এইড ফাউন্ডেশন, উন্নয়ন সমন্বয়, ডাস, টিসিআরসি, বিইআর, মানস, গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটি, ধূমপান মাদক ও দুর্নীতি বিরোধী ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।

আইবি/এসএসএইচ/