কমিউনিটি ক্লিনিকে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত জরুরি
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের অভাবে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি এবং মৃত্যু ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশব্যাপী কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যায়ে ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা।
রোববার (১৬ অক্টোবর) অ্যাডভোকেসি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত ‘খাদ্যাভ্যাস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ ঝুঁকি এবং আমাদের করণীয়’ শীর্ষক ওয়েবিনারে তারা এসব তথ্য তুলে ধরেন।
বিজ্ঞাপন
এতে জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রতি পাঁচজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজনের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বের অসংক্রামক ও প্রতিরোধযোগ্য অসুস্থতা এবং মৃত্যুর ৩০ শতাংশের জন্যই দায়ী অস্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রমের অভাব। উচ্চ রক্তচাপজনিত অসুস্থতা এবং মৃত্যুও এর মধ্যে রয়েছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলীম জানান, ট্রান্সফ্যাটযুক্ত খাবার উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়। সরকার যে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা পাস করেছে তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
বিজ্ঞাপন
ওয়েবিনারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রাইমারি হেলথ কেয়ার অ্যান্ড ইন্টেগ্রেটেড থানা হেলথ কমপ্লেক্সের পরিচালক ডা. তাহমিনা সুলতানা বলেন, সীমিত পর্যায়ে কিছু কিছু কমিউনিটি ক্লিনিকে উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে যা পর্যায়ক্রমে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
বারডেম জেনারেল হাসপাতালের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের প্রধান শামসুন্নাহার নাহিদ বলেন, মাত্রাতিরিক্ত স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার এবং লবণ পরিহারের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান বলেন, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ড্যাশ ডায়েট বা ডায়েটারি অ্যাপ্রোচেস টু স্টপ হাইপারটেনশন এবং সরকারপ্রণীত স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের গাইডলাইনের প্রচারণা বাড়াতে হবে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব এবং গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর-জিএইচএআইয়ের বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রুহুল কুদ্দুস জানান, উচ্চ রক্তচাপসেবা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে অংশীজনদের নিয়ে অ্যাডভোকেসির কাজ করছে জিএইচএআই।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশ অফিসের ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. ফারজানা আক্তার ডরিন বলেন, নীরব ঘাতক উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কাজ করছে।
ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন অ্যাসোসিয়েশনের (বাফনা) সাধারণ সম্পাদক বিপুল বিশ্বাস আপন, প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের প্রমুখ।
ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন প্রজ্ঞা’র কোঅর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এই ওয়েবিনারে অংশ নেন।
টিআই/এমএ