ফাইল ছবি

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খানসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রকৌশলীসহ তিন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলামের নেতৃত্ব একটি টিম তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

আজ যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তারা হলেন- ঢাকা ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মো. কামরুল হাসান, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আক্তারুজ্জামান ও ডেপুটি চিফ ফাইন্যান্স অফিসার রত্নদ্বীপ বর্মণ। এছাড়া ওয়াসার সহকারী সচিব মৌসুমী খানকে তলব করা হয়েছিল আজ।

একই অভিযোগে বুধবার (১৯ অক্টোবর) ঢাকা ওয়াসার  উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সহিদ উদ্দিন ও কো-অর্ডিনেশন অফিসার শেখ এনায়েত আবদুল্লাহকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুর্নীতির সব অভিযোগ অস্বীকার করেন তারা।

এর আগে গত ১৭ অক্টোবর প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রকৌশলীসহ সাত কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছিল দুদক। তলব করা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ও পদোন্নতি সুবিধা নিয়েছেন।

এ বিষয়ে দুদক সূত্রে জানা যায়, ওয়াসার কর্মকর্তা মো. আবুল কাশেম, এ কে এম সহিদ উদ্দিন, মৌসুমি খানম, ডেপুটি চিফ ফাইন্যান্স অফিসার রত্নদ্বীপ বর্মণ ও শেখ এনায়েত আবদুল্লাহ অবৈধভাবে নিয়োগ পান। পরে শেখ এনায়েত আবদুল্লাহ, প্রধান প্রকৌশলী মো. কামরুল হাসান ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান নিয়ম বহির্ভূতভাবে পদোন্নতি পান।

এর আগে, তিনটি ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট ৬ প্রতিষ্ঠানের নথিপত্র তলব করে চিঠি দেয় দুদক। তলব করা নথিপত্র আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে সরবরাহের অনুরোধ করা হয়। কিছু নথিপত্র এরইমধ্যে দুদকে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে।

ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির ১৩২ কোটি ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৬০ টাকা ছয়টি ব্যাংক থেকে বিভিন্ন চেকের মাধ্যমে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানের প্রত্যক্ষ মদতে ও নির্দেশে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে- এমন অভিযোগে তাকসিম এ খানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন জমা পড়ে। পরে দুদকের এখতিয়ার বলে আদালত রায় দেয়। ওই আবেদনের সূত্র ধরেই দুদকে আরও একটি অনুসন্ধান শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে ওয়াসার পদ্মা জশলদিয়া প্রকল্পে প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা, গন্ধবপুর পানি শোধনাগার প্রকল্পে ১ হাজার কোটি টাকা, দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্পে ১ হাজার কোটি টাকা, গুলশান বারিধারা লেক দূষণ প্রকল্পে ৫০ কোটি টাকার দুর্নীতিসহ আরও কয়েকটি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে নিয়োগ পান প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। এরপর ধাপে ধাপে সময় বাড়িয়ে তিনি এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। বিতর্কিত তাকসিম এ খানের পুনর্নিয়োগের ক্ষেত্রেও বিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো, ঠিকাদার নিয়োগে সিন্ডিকেট, ঘুষ লেনদেন, পদ সৃষ্টি করে পছন্দের লোক চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, অপছন্দের লোককে ওএসডি করাসহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে।

আরএম/জেডএস