পেশা বদলে ছিনতাইকারী ওরা
কেউ ছিলেন দোকানের কর্মচারী, কেউবা ছিলেন পেশাদার ফটোগ্রাফার। করোনায় আয় কমে যাওয়ায় বদলে ফেলেন পেশা। নতুন কোনো কর্ম না করে জড়িয়ে পড়েন অপরাধে। নাম লেখান ছিনতাই ও মলমপার্টির কারবারে। বাসে তাদের কার্যক্রমের একাংশের ভাগ দেওয়া হতো কন্ডাক্টরকেও।
এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে রাজধানীর উত্তরার আবদুল্লাহপুর থেকে অভিযান চালিয়ে ছিনতাই চক্র ও মলমপার্টির সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বিজ্ঞাপন
গ্রেফতাররা হলো চক্রের মূলহোতা স্বপন (৫২), ফিরোজ (৪০), মাসুদ রানা (৫১), শহীদুল ইসলাম (৫১), জাকির হোসেন জাকির (৫৫), শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদুল (৩৩) ও হাবিবুর রহমান সিরাজ ওরফে সিরাজ মুন্সী (৫০)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে চারটি প্লাস্টিকের ছোট কৌটা ভর্তি মলম, ছোট একটি প্লাস্টিকের কৌটায় টাইগার বাম জাতীয় মলম, একটি স্টিলের ছোট কাঁচি ও একপাতা ১০টি মাইলাম ৭.৫ ঘুমের ওষুধ জব্দ করা হয়।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) দুপুরে সিআইডির সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির ঢাকা মেট্রোর অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক।
তিনি বলেন, গ্রেফতাররা আগে অন্য পেশায় যুক্ত ছিল। কিন্তু আয়-রোজগার কম হওয়ায় ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও দ্রুত বেশি টাকা আয় করতে যুক্ত হয় মলমপার্টিতে। আবদুল্লাহপুর বেঁড়িবাধ রোডের শিকদার এন্টারপ্রাইজের সামনে থেকে বুধবার (৩ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ মলমপার্টির সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়।
ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক বলেন, এ মলমপার্টির সক্রিয় সদস্যরা এক হয়ে কৌশলে সহজসরল যাত্রীদের টার্গেট করে চেতনানাশক ওষুধ ও মলম প্রয়োগ করে টাকাসহ মূল্যবান মালামাল ছিনিয়ে নেয়।
চক্রটির কৌশল সম্পর্কে সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, চক্রটির সদস্য আটজন। গ্রেফতারের সময় একজন পালিয়ে যায়। চক্রটি ছিনতাই কার্যক্রমের আগে অভিযান নিয়ে নিজেদের মধ্যে কৌশল নির্ধারণ করত, জায়গা আগে থেকে রেকি করত। এছাড়া তারা যে বাসে অপারেশন করে সেই বাসের কন্ডাক্টরও বিষয়টি জানে। তাকেও এই টাকার ভাগ দেওয়া হয়।
ওমর ফারুক বলেন, অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা কেউ ১৪ বছর, কেউ এক-দুই মাস ধরে কাজ করছে। চক্রে এমনও সদস্য আছে যে আগে দোকানের কর্মচারী ছিল, কেউবা ফটোগ্রাফার ছিল। তারা কম পরিশ্রমে বেশি টাকা আয় করার লোভে এ পেশায় এসেছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, মলমপার্টির সংখ্যা কত, এমন পরিসংখ্যান এ মুহূর্তে আমার কাছে নেই। তবে আমরা নিয়মিত অভিযান চালিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করব।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির ঢাকা মেট্রো উত্তরের বিশেষ পুলিশ সুপার খালিদুল হক হাওলাদার, সহকারী মোহাম্মদ জহিরুল হক ও এএসপি (মিডিয়া) জিসানুল হক উপস্থিত ছিলেন।
জেইউ/এসএসএইচ/এমএমজে