জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে গুরুত্বারোপ
ই-বর্জ্য দূষণ থেকে পরিবেশ এবং জনস্বাস্থ্য নিরাপদ করতে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্ট স্থাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বক্তারা।
আলোচকরা ই-বর্জ্য বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি, যথার্থ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি, আইনের দুর্বলতা দূর করা এবং ই-বর্জ্য যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পুনর্ব্যবহারের আহ্বান জানান। এ লক্ষ্যে সিটি কর্পোরেশনগুলোতে ই-বর্জ্য ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও কথা বলেন বক্তারা।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (২৯ অক্টোবর) গবেষণা সংস্থা ‘ভয়েসেস ফর ইন্টারেক্টিভ চয়েস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট (ভয়েস)’ সিভিক সেন্টারে ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১ এর পর্যালোচনা এবং টেকসই বিজনেস মডেল শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ সভা পরিচালনা করেন। খ্যাতিমান সাংবাদিক সালিম সামাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, সামাজিক আন্দোলনের নেতা আমিনুর রসুল, সনি-র্যাংসের প্রতিনিধি জহিরুল হাসান, সাংবাদিক আহমেদ তোফায়েল প্রমুখ সভায় বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে এনজিও, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক, নারীনেত্রীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
বক্তারা বলেন, ইলেকট্রিক এবং ইলেকট্রনিক পণ্যের ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে বর্জ্য উৎপাদনও বাড়ছে। সুতরাং কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোনো বিকল্প নেই এবং এ সংক্রান্ত বিধিমালাটি দ্রুত প্রয়োগ করা আবশ্যক।
সভায় ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১ সালের পর্যালোচনা এবং কর্পোরেট বিজনেসের মডেলের ওপর একটি জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করা হয়।
জরিপে দেখা যায়, বেশীর ভাগ ইলেকট্রিক ইলেকট্রনিক্স নির্মাতাদের নিজস্ব কোনো বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নেই। তবে তারা সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্ট স্থাপন করলে অংশগ্রহণ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য (ই-বর্জ্য) ব্যবস্থাপনা বিধিমালাটির যুগোপযোগিতা বাড়ানো এবং তা বাস্তবায়ন করা সময়ের দাবি। এছাড়া দেশে প্রতি বছর কি পরিমাণ ইলেকট্রনিক দ্রব্য ইলেকট্রনিক বর্জ্যে রূপান্তরিত হচ্ছে, তার জন্য সরকারি উদ্যোগে গবেষণা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর ২০ শতাংশ হারে ই-বর্জ্য তৈরি হচ্ছে, যা এশিয়ার অনেকগুলো দেশের চেয়ে বেশি। ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশে বছরে ৪৬ লাখ ২০ হাজার টন মানবদেহের জন্য মারাত্মক ওই সব ই-বর্জ্য তৈরি হবে। বাংলাদেশে বছরে ১.৩৭ বিলিয়ন ডলারে ইলেকট্রিক সামগ্রি বিক্রি হয়, যার যার ৪০ শতাংশ রেফ্রিজারেটর ও ৩০ শতাংশ টেলিভিশন।
সালিম সামাদ বলেন, সব মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে দেশে একটি পরিবেশবান্ধব ই-বর্জ্য রিসাইক্লিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য প্রতিটি বিভাগীয় শহরে, সম্ভব হলে প্রতিটি জেলায় গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, শহরে বিশেষ অঞ্চল গড়ে তোলা প্রয়োজন। বিধিমালা বাস্তবায়নের স্বার্থে পরিবেশসম্মত ই-বর্জ্য রিসাইক্লিং প্লান্ট গড়ে তোলা আবশ্যক এবং এক্ষেত্রে সরকারের যথাযথ নজর দিতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
জাতীয় পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সভায় ১১ সদস্যের ‘ই-বর্জ্য বিষয়ক জাতীয় প্রচারণা কমিটি’ গঠন করা হয়।
এসএসএইচ