সব দলের অংশগ্রহণে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু দেখতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেই বার্তা দিতেই ঢাকায় সফররত দেশটির ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তার আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতাদের নিয়ে রোববার (৬ নভেম্বর) বৈঠক করেছেন।

তবে রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষ করে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নিজেদের অবস্থানেই অনড় ছিল। আওয়ামী লীগ ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারিকে জানায়, বর্তমান সরকার তথা আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। অন্যদিকে বিএনপি নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চেয়েছে। 

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বৈঠকেই আপত্তি জানায় আওয়ামী লীগ। দলটির ভাষ্য, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থায় আর ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। আর জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে দুই দলকে সমঝোতায় পৌঁছানোর বার্তা দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বিশেষ দূত মাসরুর মওলা নিজ নিজ দলের পক্ষে নেতৃত্ব দেন।

বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বিশেষ দূত মাসরুর মওলা ঢাকা পোস্টকে বলেন, সব দল যার যার অবস্থান তুলে ধরেছে। বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অধীনে নির্বাচন চেয়েছে। তাদের দাবি, বর্তমান সরকারের অধীনে অনেক রাজনৈতিক দল অংশ নেবে না। আর আওয়ামী লীগ বলেছে, তাদের সরকার ব্যবস্থায় ভালো নির্বাচন করা সম্ভব। তারা বলেছে, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থায় আর ফেরা যাবে না। আমরা বলেছি, দুই দলকেই সমঝোতায় পৌঁছাতে হবে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাসরুর মওলা ঢাকা পোস্টকে আরও বলেন, আমাদের সোয়া ২ কোটির বেশি যে নতুন ভোটার তারা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন কি না তা নিয়ে চিন্তিত। কারণ তারা এখনও জানে না আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হবে কি না। আমরা এই বিষয়টিও তুলে ধরেছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি, অতীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দেশের জন্য কি করছেন, এই বিষয়টি আলোচনা না করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে আমাদের। তার জন্য আওয়ামী লীগ-বিএনপিকে তাদের প্রতিহিংসা ভুলে গিয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এখন এক টেবিলে বসে আলোচনা করা দরকার।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহারের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে গত মাসে ইভিএম পদ্ধতিতে হওয়া গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে ভোট বাতিল করার প্রসঙ্গটি তুলেছে জাতীয় পার্টি। এ বিষয়ে বিএনপিও আলোচনা করে।

দেশের তিন রাজনৈতিক দলের বাহাস শোনার পর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতের মাধ্যমে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

এনআই/আরএইচ