গাছে এসেছে আমের মুকুল/ ছবি: ঢাকা পোস্ট

ফাল্গুনের আগে থেকেই দেশের উত্তরাঞ্চলসহ প্রায় সব জায়গাতেই আম গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। অনেক জায়গায় আমের গুটি বড় হচ্ছে, আবার কোথাও মুকুলে ছেয়ে আছে গাছ। ব্যস্ত সময় পার করছেন আম চাষিরা।

প্রতিবছরই দেশে আম চাষের সঙ্গে বাড়ছে উৎপাদনও। যোগ হচ্ছে কর্মসংস্থানের। আম চাষ ও উৎপাদনে বরাবরই এগিয়ে রাজশাহী অঞ্চল। আমের রাজধানীখ্যাত রাজশাহীতে এবারও আমের ভালো ফলন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত দুই বছরের আম চাষ ও উৎপাদনের পরিমাণ উল্লেখ করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হর্টিকালচার উইংয়ের উদ্যান উন্নয়ন কর্মকর্তা এ বি এম শাহ এমরান ঢাকা পোস্ট-কে বলেন, ‘গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সারাদেশে এক লাখ ৮৮ হাজার ৮৩৬ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়। উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২২ লাখ ২৮ হাজার ৯৭২ মেট্রিক টন। গত বছর (২০১৯-২০) চাষের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৮৯ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ২৪ লাখ ৬৮ হাজার পাঁচ মেট্রিক টনে গিয়ে ঠেকেছে।’

দেশে আম চাষ ও উৎপাদনের ভিত্তিতে ১৪টি অঞ্চলে ভাগ করে হিসাব করে কৃষি সম্প্রসারণের অধিদফতরের হর্টিকালচার উইং। এসব অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আম চাষ ও উৎপাদন হয় রাজশাহী অঞ্চলে। এ অঞ্চলে গত বছর ৭৭ হাজার ৪৮৭ হেক্টর জমিতে ৯ লাখ ৭০ হাজার ১৬৮ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছে।

এছাড়া দ্বিতীয় স্থানে ঢাকা অঞ্চলে ১৭ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে দুই লাখ ৮৪ হাজার ৫১২ মেট্রিক টন, তৃতীয় যশোরে ১৪ হাজার ৫১৪ হেক্টর জমিতে দুই লাখ ৫১৫ মেট্রিক টন, কাছাকাছি রাঙ্গামাটিতে ১৪ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে এক লাখ ৫৫ হাজার ৯৯৫ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছে।

এর বাইরে আম চাষে অন্যতম অঞ্চল দিনাজপুরে ১১ হাজার ৩১৬ হেক্টর জমিতে এক লাখ ৬৯ হাজার ১৩৮ মেট্রিক টন, রংপুরে সাত হাজার ১৮১ হেক্টর জমিতে ৮৮ হাজার ১১৩ মেট্রিক টন, ময়মনসিংহে সাত হাজার ১০৯ হেক্টর জমিতে এক লাখ ছয় হাজার ৪২৩ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছে।

এ সময়ে আমের মুকুলের যত্ন

কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্র বলছে, এ সময়ে আমের মুকুলে অ্যানথ্রাকনোজ রোগ দেখা দেয়। এ রোগ দমনে মুকুল আসার পর ফুল ফোটার পূর্ব পর্যন্ত আক্রান্ত গাছে টিল্ট-২৫০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি অথবা দুই গ্রাম ডাইথেন এম-৪৫ প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। এছাড়া আমের আকার মোটর দানার মতো হলে গাছে দ্বিতীয়বার স্প্রে করতে হবে।

এ সময় প্রতিটি মুকুলে অসংখ্য হপার নিম্ফ দেখা যায়। আম গাছে মুকুল আসার ১০ দিনের মধ্যে কিন্তু ফুল ফোটার আগেই একবার এবং এর এক মাস পর আরেকবার প্রতি লিটার পানির সঙ্গে ১.০ মিলি সিমবুস/ফেনম/ডেসিস ২.৫ ইসি মিশিয়ে গাছের পাতা, মুকুল ও ডালপালা ভালোভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে।

একে/এফআর