ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) প্রস্তাবিত প্রকল্পটি নির্বাচন কমিশনে ফেরত পাঠিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। ৮ হাজার ৭১১ কোটি টাকার এ প্রকল্পটি নেওয়ার আগে কোনো সমীক্ষা যাচাই করা হয়নি। তবে সমীক্ষা যাচাই করা না হলেও পরিকল্পনা কমিশনের আপত্তিতে টেকনিক্যাল কমিটির সইযুক্ত সুপারিশ ডিপিপির সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে। আগামী রোববার পরিকল্পনা কমিশনে সংশোধিত ডিপিপি পাঠাবে ইসি।

এর আগে, গত অক্টোবরে ৮ হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকার 'নির্বাচনী ব্যবস্থায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার বৃদ্ধি এবং টেকসই ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশন পাঠায় ইসি। পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে গত ৮ নভেম্বর ইসির প্রস্তাবটি ফেরত পাঠায়। নির্বাচন কমিশন আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ১৫০টি আসনে ইভিএম ব্যবহার করতে চায়। এজন্য নতুন এই প্রকল্পটির মাধ্যমে দুই লাখ ইভিএম কিনতে চায় ইসি। 

ইসির নতুন ডিপিপি অনুযায়ী, প্রতিটি ইভিএমের দাম ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৫ হাজার টাকা। এছাড়া ৫৩৪টি গাড়ি, ১০টি গুদাম তৈরি, এক হাজারের মতো লোকবল ইত্যাদি খাতে ওই ৮ হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকার প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। 

ইসি জানায়, পরিকল্পনা কমিশন কিছু ক্ষেত্রে ব্যয় কমানোসহ ফিজিবিলিটি স্টাডির কথা বলেছে পর্যবেক্ষণে। ইসি মনে করে, যেহেতু বর্তমানে বিভিন্ন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে, তাই একই যন্ত্রের ওপর ফিজিবিলিটি স্টাডির প্রয়োজন নেই। এক্ষেত্রে টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশ নিয়েই প্রস্তাবটি ফের পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে টেকনিক্যাল কমিটির সদস্যরা এসে সুপারিশসূচক স্বাক্ষরও করে গেছেন প্রকল্প প্রস্তাবে। 

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এবং ইভিএম সংক্রান্ত কারিগরি কমিটির সদস্য ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বৈঠকের বিষয়ে বলেন, জরুরি কিছু নয়। আগে স্বাক্ষর নেওয়া হয়নি। আজ স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে।

ইভিএম প্রকল্প পরিচালক কর্নেল রাকিবুল হাসান বলেন, পরিকল্পনা কমিশন বেতন-ভাতা, পরিবহন ব্যয়, মেইটেইনেন্স সার্ভিস কতখানি যথার্থ সেগুলো দেখতে বলেছে। প্রকল্প ব্যয় সেটা কিছু কমতে পারে। খুব একটা বেশি না। ফিজিবিলিটি স্টাডিকে তো আর রিপ্লেস করা যায় না। যেহেতু প্রকল্পের সামনে সময় কম আছে। তাই বর্তমান ইভিএমকেই আমরা রেপ্লিকেট করছি। সেজন্য টেকনিক্যাল কমিটির মতামত জরুরি।
 
তিনি বলেন, প্ল্যানিং কমিশন আমাদের কিছু অবজারবেশনের জায়গা দিয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম ছিল টেকনিক্যাল কমিটির রিপোর্টটা সাপোর্টেট কী-না। আমরা যে টেকনিক্যাল স্পেসিফেকশন দিয়েছি সেটা। সেই কাজটা আজকে করলাম। এখন গ্রিন বুকে এন্ট্রি হয়েছে। অর্থাৎ প্রকল্পটি এডিবিভুক্ত হয়ে গেছে। এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ে যাবে। তারা আবার যাচাই-বাছাই করে দেখবে।

নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ এ বিষয়ে বলেন, টেকনিক্যাল কমিটি মোটা দাগে যে সুপারিশ দিয়েছে সেগুলো হলো, আগামী নির্বাচন করতে গেলে বেশকিছু ইভিএম লাগবে। বর্তমানে যে ইভিএম আছে তা দিয়ে নির্বাচন কমিশন যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, যে দেড়শ আসনের ক্ষেত্রে আমাদের আরও ইভিএম কিনতে হবে। আগামী রোববার টেকনিক্যাল কমিটির সকলের স্বাক্ষরযুক্ত পর্যবেক্ষণ পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

এসআর/এসকেডি