রাজধানীর খিলক্ষেতের বটতলা এলাকায় শাশুড়ির সঙ্গে অভিমান করে মারিয়া আক্তার খুশি (১৯) নামের এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার (৫ মার্চ) বিকেলে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহতের স্বামী মাহমুদুল হক রিফাত ঢাকা পোস্টকে বলেন, আট মাস আগে আমাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বাবা চোখের ডাক্তার দেখাবেন বলে আমার বাবা-মা বাসায় এসেছেন। সকালে আমার স্ত্রীকে নাস্তা বানাতে বলেন আমার মা। তখন সে বলে, আমি রুটি বানাতে পারি না। এ কথা বলে সে আবার শুয়ে পড়ে। পরে আমি উঠলে আমার সঙ্গে সে আবার ওঠে। 

তিনি বলেন, আমার মা সকালে ব্যায়াম করছিল, এতে তার কাপড় সরে যাওয়ায় খুশি মাকে কর্কশ ভাষায় কাপড় ঠিক করতে বলে। এতে মা রেগে যান। পরে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। তখন আমি অফিসে চলে যাই। সে (খুশি) আমাকে বলে, আমি বাড়িতে যাব, আমাকে টিকিট কেটে দাও।

খুশির স্বামী বলেন, অফিসে যাওয়ার পর আমি তাকে কয়েকবার ফোন করি কিন্তু তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। আমার পাশের রুমে বন্ধু থাকে, তাকে ফোন করে খুশি বাড়ি যাবে কি না জিজ্ঞেস করি। আমার বন্ধু জানায় খুশি যাবে। পরে বিকেলে আমার বন্ধু ফোন দিয়ে বলে খুশি দরজা খুলছে না। আমার অফিস গুলশানে। আমি দ্রুত মোটরসাইকেলে এসে দরজা ধাক্কা দেই কিন্তু খোলে না। পরে দরজার ফাঁক দিয়ে দেখি ফ্যানের সঙ্গে সে ঝুলছে। 

‘পরে আমি দরজা ভেঙে বটি দিয়ে ওড়না কেটে তাকে নিচে নামাই। তখন মনে হচ্ছিল সে বেঁচে আছে। পরে হাত পা বুকে চাপ দেই কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। বাড়িওয়ালা আসে। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।’

মাহমুদুল হক বলেন, পুলিশ এসে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। পরে রাত ১১টার দিকে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।

খুশির বাবা মামুনুর রশিদ জানান, নামাজ পড়ে এসে যখন শুয়ে আছি, তখন আমার স্ত্রীর সঙ্গে সে কথা বলছিল। সে বাড়িতে আসবে বলল। আমি বললাম, কয়েকদিন আগেই তো বেড়িয়ে গেল, এখন কেন আসবে। আমি জামাইকে ফোন করি, সে বলল কাগজপত্র তুলতে যাবে। পরে জামাই বলে সে যদি এ বার যায় আমি তাকে নিয়ে আসব না। পরে আমি মেয়েকে বলি, আমি তোমার স্বামীর সঙ্গে আলাপ করব। তুমি কয়েকদিন পরে এসো, এখন আসার দরকার নাই। পরে বিকেলে শুনি আমার মেয়ে মারা গেছে। সে এবার এইচএসসি পাস করেছে। অনেক মেধাবী ছিল।

তিনি বলেন, আমার একটাই মেয়ে। আমার মেয়ে যদি নিজেই আত্মহত্যা করে থাকে তাহলে কোনো অভিযোগ নাই। যদি আমার মেয়েকে তার স্বামী কোনোভাবে মেরে ফেলে তাহলে আমার অভিযোগ আছে।

খিলক্ষেত থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামসুল হক সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, খবর পেয়ে আমরা মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে রাতেই ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠাই। প্রাথমিকভাবে যেটি জানা যায়, পারিবারিক কলহের জেরে আত্মহত্যা করেছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

ঢামেক/এসএসএইচ