নৌ-পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা চলমান ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ খাতে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে সরকার, মালিক- শ্রমিক নেতৃবৃন্দের বৈঠকের পর এ তথ্য জানানো হয়।

শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) খালেদ মামুন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শ্রম ভবনে আয়োজিত বৈঠক শেষে প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের উপস্থিতিতে নৌ-যান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম এ ঘোষণা দেন।

শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, আমি বলব না মালিক বা শ্রমিক পক্ষ ঝামেলা সৃষ্টি করেছে। তবে ঝামেলা একটা হয়েছে, যেখান থেকে মামলা হয়েছে। মামলা থাকবে। সেটা আমি দেখব। মারামারি কিন্তু ভালো বিষয় নয়। মামলা প্রত্যাহার হবে। যারা আসামি হয়ে জেলহাজতে গিয়েছেন তাদের জামিনেরও ব্যবস্থা করব। কিন্তু এ সমস্যার স্থায়ী একটা বিহিত হওয়া দরকার।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবনা প্রণয়ন কমিটি গঠিত হয়েছে। শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তায় অন্তর্বর্তীকালীন টোকেনের ব্যবস্থা করা হবে। এক মাসের মধ্যে গঠিত কমিটি মজুরি নির্ধারণ ও গেজেট আকারে প্রকাশ করবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেকোনো সমস্যায় মালিকের চেয়ে শ্রমিকের ক্ষতিটাই বেশি। কারণ শ্রমিকের সমস্যা টের পাওয়া যায় প্রথম দিন থেকেই। যে কারণে তাদের সমস্যার সমাধান আগে দরকার। মালিক পক্ষের দরদ শ্রমিকের প্রতি। শ্রমিকদেরও মালিকের প্রতি দরদ থাকার কথা, সেখানে ব্যত্যয় ঘটছে।

ত্রি-পক্ষীয় যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তা এক মাসের মধ্যে সমস্যার সমাধান করবে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বিষয়টি কর্তৃপক্ষ, কিছু মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে। সবাই যদি নিজের কাজটা করতেন তাহলে আজ এ পর্যায়ে আসতে হতো না।

মালিক-শ্রমিক বিরোধে কার লাভ প্রশ্ন তুলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আসলে কারো লাভ নেই। এরপরও ঝামেলা হয়, কেন? আপাতত অন্তর্বর্তীকালীন বিশেষ ভাতার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যেসব নৌ-যানের ওজন ১ হাজার টন (ছোট নৌ-যান) সেসব নৌ-যানের শ্রমিকরা পাবেন ১২০০ টাকা ভাতা। এছাড়া যেসব নৌ-যানের ওজন এক হাজার টনের বেশি (বড় নৌ-যান)  সেসব নৌ-যানের শ্রমিকরা পাবেন ১৫০০ টাকা ভাতা। বাকি সব নৌ-যানের মজুরি নির্ধারণসহ অন্যান্য সব প্রস্তাবনা কমিটির অধীনে হবে।

নৌ-যান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম বলেন, আমরা যে ১০ দফা দাবি উত্থাপন করেছি এর প্রথম ও প্রধান দাবি হচ্ছে শ্রমিকদের ভাতা বা মজুরি। এ ব্যাপারে প্রতিমন্ত্রী যে ঘোষণা দিয়েছেন, যাদের দায়িত্ব দিয়েছেন তারা ঠিকঠাক দায়িত্ব পালন করলে সমস্যা এক মাসের মধ্যেই সমাধান সম্ভব। আশা করছি, আমাদের দাবি দাওয়ার প্রতি সদয় হবেন। ভাতা চলতি মাস থেকেই কার্যকর হবে।

সভায় নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, বিআইডব্লিউটি, শিপিং করপোরেশন, নৌ-যান মালিক ও শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

জেইউ/এসকেডি