কোকেন চোরাচালানের রুট বাংলাদেশ, বিক্রি হচ্ছে খুচরাও
কোকেনসহ আটকরা
রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে উচ্চমূল্যের মাদক কোকেনের একটি চালান জব্দ করেছে পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। জব্দ হওয়া কোকেনের ওজন প্রায় ২ কেজি, এর বাজারমূল্যে আনুমানিক ৬০ কোটি টাকা। এছাড়া এর চালানের সঙ্গে জড়িত ছয়জনকে আটকও করা হয়েছে।
র্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মূলত কোকেনের চোরাচালানে বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। দেশে এ মাদকটি খুচরায়ও বিক্রি হচ্ছে। এ চালানের গন্তব্য ছিল পূর্ব এশিয়া।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর গুলিস্তান ও যাত্রাবাড়ীর কোনাপাড়া এলাকায় অভিযান এসব মাদক জব্দ ও পাচারকারীদের আটক করে র্যাব-১০ এর একটি দল। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৯টি মোবাইলফোনসহ নগদ ২ হাজার ২৬০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
কোকেনসহ আটকরা হলেন- মো. হান্নান (৩৫), মো. উজ্জল (২৮), মো. সুলতান হাসান (৫০), উদয় দাস (৫২), শ্রী পলাশ দে (৫৮) ও ফিরোজ আলম খাঁন (৫০)। তাদের মধ্যে মো. হান্নান ও উজ্জল আপন সহোদর।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে র্যাব-১০ উপ-অধিনায়ক মেজর শাহরিয়ার বলেন, ‘আমরা এ চালানের গন্তব্য ও কোন দেশ থেকে বাংলাদেশে এটি আসছে তা জানতে পেরেছি। মূলত, বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী একটি দেশ থেকে এই কোকেনের চালান আসে। যা পরবর্তীতে পূর্ব এশিয়ার একটি দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছিল।’
তিনি বলেন, ‘চাহিদা কম হলেও খুচরায় বাংলাদেশেও কোকেন বিক্রি চলছিল। এক গ্রাম কোকেন বাংলাদেশে ২৫০-৩০০ ডলারে বিক্রি হয়েছে বলেও জানিয়েছেন গ্রেফতাররা। এই মাদকের সঙ্গে দেশি-বিদেশি মাদক কারবারি চক্রের কারা জড়িত আছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
র্যাব-১০ কর্মকর্তারা বলছেন, কোকেনের ওই চালানটি এসেছিল বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে। গন্তব্য ছিল পূর্ব এশিয়ার একটি দেশে। অন্য পণ্যের আড়ালে ওই কোকেনের চালান কুরিয়ারে পাঠানোর প্রক্রিয়াও চলছিল। প্রাথমিক পরীক্ষায় চালানটি যে কোকেন তার প্রমাণও পেয়েছে র্যাব।
মেজর শাহরিয়ার জিয়াউর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কোনাপাড়া মোমেনবাগ এলাকার সালাউদ্দিন স্কুল রোডের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে কোকেন ব্যবসায়ী চক্রের সুলতান হাসান, হান্নান ও উজ্জলকে আটক করা হয়। এ সময় এক কেজি ওজনের এক প্যাকেট কোকেন উদ্ধার করা হয়।
পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পল্টন এলাকার আবাসিক হোটেল মেঘনায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে আরও এক কেজি কোকেনসহ চক্রের বাকি তিন সদস্যকে আটক করা হয়।
আটক হওয়া চোরাচালানকারীরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে জানিয়েছে, তারা পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী চক্রের সদস্য। এই চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কৌশলে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছেন।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাদক ব্যবসার পাশাপাশি এই চক্রের সদস্যরা আন্তর্জাতিক কোকেন পাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন বলে ধারণা করছে র্যাব।
তিনি আরও বলেন, ‘জব্দ প্যাকেটের গায়ে কোকেন লেখা ছিল। তাছাড়া তাৎক্ষণিক পরীক্ষার মাধ্যমে এটা কোকেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।’
আটকদের বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।
জেইউ/এফআর