আগের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ করতে যাচ্ছে বিএনপি। তবে সমাবেশ পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে নাকি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হবে, তা নিয়ে বিএনপি-পুলিশের মধ্যে মতবিরোধ চলছে। এমন অনিশ্চয়তার মধ্যে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে রাজধানীসহ সারাদেশে সাঁড়াশি অভিযানে নেমেছে পুলিশ। চলছে ধর-পাকড়ও। তারই ধারাবাহিকতায় কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে বের হওয়ার গেটের সামনে তল্লাশি চৌকি বসিয়েছে পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

যদিও তল্লাশি ও চেকপোস্ট বসানোকে রুটিনমাফিক কাজ বলেই জানিয়েছে কমলাপুর রেল পুলিশ। তবে শাহজাহানপুর থানা পুলিশ বলছে, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে রেলের যাত্রীসহ সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ ও ব্যাগ তল্লাশি করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না।

সুমন ইসলাম নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্রবেশ ও বের হওয়ার গেটে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেকপোস্টে পুলিশ সদস্যরা তরুণ ও যুবকদের পরিচয় এবং ঢাকায় আসার কারণ জানতে চাচ্ছেন। কোনো কোনো পুলিশ সদস্য আমাকে জিজ্ঞাসা করেছেন, আমি বিএনপির মহাসমাবেশ উপলক্ষে ঢাকায় এসেছি কি না? যারা উপযুক্ত উত্তর দিচ্ছেন তাদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। আর যাদের সন্দেহ হচ্ছে তাদের নাম-ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর রেখে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।

দিনাজপুর থেকে পঞ্চগড় দ্রুতযান এক্সপ্রেসে কমলাপুরে নেমে বের হওয়ার পথে রেল পুলিশ ও শাহজাহানপুর থানা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েন আলী আসগর নামের এক ব্যক্তি।

তিনি বলেন, ঢাকায় ভাতিজার বিয়ে হচ্ছে। সেই বিয়েতে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছি। কমলাপুরে এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখিন এর আগে কখনো হতে হয়নি। আমার লাগেজ-ব্যাগ চেক করা হয়েছে। আমার নাম-পরিচয় ও ঢাকায় আসার কারণ জানতে চাওয়া হয়। পরে পুলিশ সদস্যদের সবকিছু বিস্তারিত জানিয়ে চেকপোস্ট পার হই।

এ বিষয়ে ঢাকা রেলওয়ে থানার (কমলাপুর) অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিএনপির সমাবেশ ঘিরে নয় বরং কমলাপুরে নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে তল্লাশি, চেকপোস্ট পরিচালনা ও সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

শাহজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনির হোসেন মোল্লা ঢাকা পোস্টকে বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকলে আমরা চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশি করি। কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকায় চেকপোস্ট বসানোর পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবেই সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশি করা হচ্ছে। তবে কাউকে হয়রানি করা পুলিশের উদ্দেশ্য নয়।

বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে বিশেষ কোনো নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে কী না? জানতে চাইলে স্টেশন ব্যবস্থাপক মাসুদ সারওয়ার ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বিষয়ে আমরা সবাই এলার্ট আছি। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা নেই। আমাদের এখানে কোনো আলাদা চেকপোস্ট নেই, বাইরে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়েছে।

জেইউ/কেএ