অনলাইন প্ল্যাটফর্মে লাইভ পর্ন ভিডিও স্ট্রিমিং প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারকারী চক্রের মূল হোতাসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।

বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ১১টি মোবাইল ফোন, ১৭টি সিম কার্ড, ২টি ল্যাপটপ, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ও ডেভিট ও ক্রেডিট কার্ড জব্দ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তরা হলেন, আবু মুসা ইমরান আহমেদ সানি, মো.আবু শামা, ফাতেমা আক্তার, শায়লা আক্তার , শাহ আরমান ও মো. সেলিম।

বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিটিটিসি প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।

তিনি বলেন, কাউন্টার টেররিজমের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে লাইভ পর্ন ভিডিও স্ট্রিমিং প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারকারী চক্রের মূল হোতাসহ ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। সরকারের পদক্ষেপ অনুযায়ী দেশে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অশ্লীলতা ও পর্ন সাইট একের পর এক বন্ধ হয়েছে। তবে সাইবার অপরাধীরা নিত্য নতুন কৌশলের মাধ্যমে তাদের অপরাধ কার্যক্রম চলমান রেখেছে। বাংলাদেশে নব্য পর্ন ব্যবসার কৌশল হিসেবে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে লাইভ পর্ন ভিডিও স্ট্রিমিং পরিচালনা করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ ও বিদেশে অবৈধভাবে পাচার করে আসছে।

তিনি বলেন, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অপরাধ প্রবণতা নিরসনে কাউন্টার টেররিজমের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ নিয়মিত সাইবার পেট্রোলিংয়ের মাধ্যমে একটি আন্তর্জাতিক ভিডিও লাইভ প্ল্যাটফর্ম ‘টপ ক্লাস এন্টারটেইনমেন্টে’র এর মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ‘ড্রিম লাইভ’ এর অনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে পারে।পরবর্তীতে ব্যাপক অনুসন্ধান ও অনলাইন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশে ওই অনলাইন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন সাইটটির মূল হোতা আবু মুসা ইমরান আহমেদ সানি ও তার সহযোগীদের শনাক্ত করা হয়। গ্রেপ্তার আবু মুসা ইমরান আহমেদ সানি সারা দেশে ১২০টির অধিক এজেন্সির মাধ্যমে ভিডিও লাইভ স্ট্রিমিং সাইটটি পরিচালনা করে।

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার আবু মুসা ইমরান আহমেদ সানি অন্য সহযোগীদের সহায়তায় বাংলাদেশে অননুমোদিত ভার্চুয়াল ডায়মন্ড ও ভার্চুয়াল গেম কয়েন অবৈধ ই-ট্রানজেকশনের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।  সানির ব্যাংক ও মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস অ্যাকাউন্ট স্ট্যাটমেন্ট পর্যালোচনায় গত ৩ মাসে প্রায় ৩০ কোটি টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সানি ও তার অন্য সহযোগীরা পরস্পরের যোগসাজশে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে লাইভ পর্ন ভিডিও স্ট্রিমিং সাইট পরিচালনা করে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ ও বিদেশে অবৈধভাবে পাচারের কথা স্বীকার করেছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে ডিএমপির রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১টি মামলা রুজু করা হয়েছে। 

এমএসি/এসকেডি