প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে কোটা চালুর দাবি দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা চালুর দাবি জানিয়েছেন চাকরি প্রত্যাশী দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।
বিজ্ঞাপন
এসময় দাবি বাস্তবায়ন না হলে আগামী ২৭ ডিসেম্বর দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শিক্ষাজীবনে অর্জিত সব সার্টিফিকেট ও বইপত্র পুড়িয়ে ফেলার ঘোষণা দেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সাজ্জাদ হোসেন সাজু বলেন, প্রতিবন্ধিতা সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত। এটা আমাদের কোনো অপরাধ নয়। আমরা রাষ্ট্র থেকে শুরু করে সব জায়গায় অবহেলিত। রাষ্ট্র চায় সার্টিফিকেটধারী ভিক্ষুক। বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান আমাদের নিতে চায় না। তাদের ধারণা আমরা অযোগ্য। স্বাভাবিক প্রতিযোগীদের সঙ্গে আমাদেরকে তুলনা করা হয়।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। তিনি একটি কমিটি করে দিয়েছেন কিন্তু এরপরও কোনো কাজ হয়নি। এরপর আমরা আন্দোলন শুরু করি। কিন্তু পুলিশ আমাদের গায়ে হাত দেয়। আমরা কোন দেশে বাস করছি? যেদেশে একজন প্রতিবন্ধীর গায়ে পুলিশ হাত দেয়।
ইডেন মহিলা কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন পারুল বেগম হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আমি মাস্টার্স শেষ করেছি অনেক আগে। বাড়ি নারায়ণগঞ্জ জেলায়। আমার উপজেলা থেকে মাত্র দুজন পরীক্ষা দিয়েছি। তারপরও আমাকে নেওয়া হয়নি। জীবনে অনেক সংগ্রাম করে এ পর্যন্ত এসেছি। কিন্তু আমার সার্টিফিকেটের কোনো মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। এখন আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন রাহাদ খান। কান্না বিজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আইনে বলা আছে সবার অধিকার সমান। আইনে এটাও বলা আছে যারা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী তাদেরকে বিশেষ সুবিধা দিতে হবে। কিন্তু আমাদেরকে কেন সে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না? শেখ হাসিনাকে বলা হয় মাদার অব হিউম্যানিটি। উনি যদি এটাই হয়ে থাকেন তাহলে এই ১৯ জন মানুষের প্রতি কি দৃষ্টি দেওয়া উচিত না?
উল্লেখ্য, প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগে এবার পুরনো নিয়োগ বিধিমালা অনুসরণ করে নারী আবেদনকারীদের ৬০ শতাংশ কোটাসহ পোষ্য কোটা, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ও অন্যান্য কোটা রেখে গত ১৪ ডিসেম্বর ফল প্রকাশ করা হয়।
এইচআর/কেএ